Monday, August 8, 2022

ইস্মায়েল(ইসমাইল) ও ইসহাকের প্রতি আশীর্বাদের স্বরূপ কি?


ইস্মায়েল(ইসমাইল) ও ইসহাকের প্রতি আশীর্বাদের স্বরূপ কি? 

বর্ণনায়ঃ দানিয়েল স্টিফেন। 

ইদানীং মুসলিম দা’য়ীরা(প্রচারকরা) আদিপুস্তক থেকে দু একটি ভার্স নিয়ে এসে এটা প্রমাণ করতে চান যে ইস্মায়েল(ইসমাইল) এর বংশকে মহাজাতি হওয়ার আশীর্বাদ করা হয়েছে আর এর মধ্য দিয়ে মুহাম্মদের মাধ্যমে মুসলিম জাতির ব্যাপারে ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছে। অর্থাৎ খ্রিষ্টানদের দাবী ইসহাকের মধ্য দিয়ে আশীর্বাদ এটা মিথ্যা। আমরা যদি বাইবেলে ইশ্মায়েল ও ইসহাকের আশীর্বাদের তুলনামূলক আলোচনা করি তাহলে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য করব।
ক)বংশ বলে আখ্যায়িত হওয়া, 
খ)বহুবংশের আশীর্বাদ, 
গ)কনান দেশের অধিকার, 
ঘ)ব্যবস্থা/নিয়ম/শরীয়তের অধিকার, 
ঙ)রহমতের/আশীর্বাদের অধিকার।

উপরোক্ত পাঁচটি ক্যাটাগরিতে আমরা নীচের বর্ণনার মাধ্যমে বাইবেলের রেফারেন্সসহ আলোচনা করব যেন বিষয়টি সবার কাছে পরিস্কার হয় এবং আমরা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হই। 



আশীর্বাদের বিষয়ঃ ক) আব্রাহা্মের(ইব্রাহীমের )বংশ বলে কে আখ্যায়িত হবে?

ইস্মায়েল(ইসমাইল) সম্পর্কে বাইবেলের রেফারেন্সঃ
১)আদিপুস্তক ২১ অধ্যায়ঃ 13আর ঐ দাসীর ছেলে থেকেও আমি এক জাতি তৈরী করব, কারণ সে তোমার বংশীয়।”

ইসহাক সম্পর্কে বাইবেলের রেফারেন্সঃ
১)আদিপুস্তক ২১ অধ্যায়ঃ 12কিন্তু ঈশ্বর অব্রাহামকে বললেন, “ঐ বালকের কারণে ও তোমার ঐ দাসীর কারণে দুঃখিত হয়ো না; সারা তোমাকে যা বলছে, তার সেই কথা শোন; কারণ ইস্হাকের মাধ্যমে তোমার বংশ আখ্যাত হবে। 13আর ঐ দাসীর ছেলে থেকেও আমি এক জাতি তৈরী করব, কারণ সে তোমার বংশীয়।” 
২)আদিপুস্তক ১৫ অধ্যায়ঃ 13তখন তিনি অব্রামকে বললেন, নিশ্চয় জেনো, তোমার বংশধরেরা পরদেশে প্রবাসী থাকবে এবং বিদেশী লোকদের দাসত্ব করবে ও লোকে তাদেরকে চারশো বছর পর্যন্ত দুঃখ দেবে;

মন্তব্যঃ আব্রাহামের বংশ হিসাবে একমাত্র ইসহাককেই নির্বাচিত করেছেন। অর্থাৎ যে আশীর্বাদ ঈশ্বর আব্রাহামের মাধ্যমে দিতে যাচ্ছেন তার দাবীদার ইসহাকের বংশ। ইশ্মায়েল সন্তান হিসাবে বংশীয় কিন্তু উত্তরাধিকারের দাবীদার হিসাবে বংশ বলে বিবেচিত নয়। ঈশ্বর পরপর দুটি বাক্যের মধ্য দিয়ে বিষয়টি পরিস্কার করেছেন। ঈশ্বর আব্রাহামকে বলেছিলেন তাঁর বংশধররা ৪০০ বছর প্রবাসে থাকবে আর আমরা সবাই জানি এই বংশধররা ছিলেন ইসহাকের বংশধর যারা ইস্রায়েলী নামে পরিচিত।

 
আশীর্বাদের বিষয়ঃখ) বহুবংশের আশীর্বাদ

ইস্মায়েল(ইসমাইল) সম্পর্কে বাইবেলের রেফারেন্সঃ
১) আদিপুস্তক ১৬ অধ্যায়ঃ 10সদাপ্রভুর দূত তাকে আরও বললেন, “আমি তোমার(হাগার) বংশের এমন বৃদ্ধি করব যে, গণনা করা যাবে না।” 11সদাপ্রভুর দূত তাকে আরও বললেন, “দেখ, তোমার গর্ভ হয়েছে, তুমি ছেলে জন্ম দেবে ও তার নাম ইশ্মায়েল [ঈশ্বর শুনেন] রাখবে, কারণ সদাপ্রভু তোমার দুঃখ শুনলেন।” 
২)আদিপুস্তক ১৭ অধ্যায়ঃ 20আর ইস্মায়েলের বিষয়েও তোমার প্রার্থনা শুনলাম; দেখ, আমি তাকে আশীর্বাদ করলাম এবং তাকে ফলবান করে তার প্রচুর পরিমাণে বংশ বৃদ্ধি করব; তা থেকে বারোটি রাজা সৃষ্টি হবে ও আমি তাকে বড় জাতি করব। 
৩)আদিপুস্তক ২১ অধ্যায়ঃ 13আর ঐ দাসীর ছেলে থেকেও আমি এক জাতি তৈরী করব, কারণ সে তোমার বংশীয়।” 
 ৪)আদিপুস্তক ২১ অধ্যায়ঃ 18তুমি ওঠ, ছেলেটিকে তোলো এবং তাকে উত্সাহ দাও; কারণ আমি তার মধ্যে দিয়ে এক মহাজাতি তৈরী করব।” 

ইসহাক সম্পর্কে বাইবেলের রেফারেন্সঃ
১) আদিপুস্তক ১৫ অধ্যায়ঃ 5পরে তিনি তাঁকে বাইরে এনে বললেন, “তুমি আকাশের দিকে দেখে যদি তারা গুণতে পার, তবে গুনে বল; তিনি তাঁকে আরও বললেন এইরকম তোমার বংশ হবে।
২)আদিপুস্তক ১৭ অধ্যায়ঃ 2আর আমি তোমার সঙ্গে নিজের নিয়ম স্থির করব ও তোমার প্রচুর পরিমাণে বংশ বৃদ্ধি করব।” 3তখন অব্রাম উপুড় হয়ে পড়লেন এবং ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে আলাপ করে বললেন, 4“দেখ, আমিই তোমার সঙ্গে নিজের নিয়ম স্থির করছি, তুমি বহু জাতির আদিপিতা হবে। 5তোমার নাম অব্রাম আর থাকবে না, কিন্তু তোমার নাম অব্রাহাম হবে; কারণ আমি তোমাকে বহু জাতির আদিপিতা করলাম। 6আমি তোমাকে অত্যাধিক পরিমাণে ফলবান করব এবং তোমার থেকে বহুজাতি সৃষ্টি করব; আর রাজারা তোমার থেকে সৃষ্টি হবে।
৩)আদিপুস্তক ১৭ অধ্যায়ঃ 15আর ঈশ্বর অব্রাহামকে বললেন, “তুমি তোমার স্ত্রী সারীকে আর সারী বলে ডেকো না; তার নাম সারা [রাণী] হল। 16আর আমি তাকে আশীর্বাদ করব এবং তা থেকে এক ছেলেও তোমাকে দেব; আমি তাকে আশীর্বাদ করব, তাকে সে জাতির [আদি-মা] করা হবে, তা থেকে লোকদের রাজারা সৃষ্টি হবে।”
৪)আদিপুস্তক ২২ অধ্যায়ঃ 17এই জন্য আমি আমারই দিব্য করে বলছি, আমি অবশ্য তোমাকে আশীর্বাদ করব এবং আকাশের তারাদের ও সমুদ্রতীরের বালির মতো তোমার অতিশয় বংশ বৃদ্ধি করব; তোমার বংশ শত্রুদের পুরদ্বার অধিকার করবে; 
৫)আদিপুস্তক ২৬ অধ্যায়ঃ 4আমি আকাশের তারাদের মতো তোমার বংশ বৃদ্ধি করব, তোমার বংশকে এই সব দেশ দেব ও তোমার বংশে পৃথিবীর যাবতীয় জাতি আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে। 
৬)আদিপুস্তক ২৬ অধ্যায়ঃ 24সেই রাতে সদাপ্রভু তাঁকে দর্শন দিয়ে বললেন, “আমি তোমার পিতা অব্রাহামের ঈশ্বর, ভয় কর না, কারণ আমি নিজের দাস অব্রাহামের অনুরোধে তোমার সহবর্ত্তী, আমি আশীর্বাদ করব ও তোমার বংশ বৃদ্ধি করব।” 

মন্তব্যঃ বংশ বৃদ্ধির আশীর্বাদ উভয়কেই করা হয়েছে।

আশীর্বাদের বিষয়ঃগ)কনান(ইস্রায়েল)দেশের অধিকার

ইস্মায়েল(ইসমাইল) সম্পর্কে বাইবেলের রেফারেন্সঃ কোন উল্লেখ নাই।

ইসহাক সম্পর্কে বাইবেলের রেফারেন্সঃ
১)আদিপুস্তক ১২ অধ্যায়ঃ7পরে সদাপ্রভু অব্রামকে দেখা দিয়ে বললেন, “আমি তোমার বংশকে এই দেশ দেব,” তখন সেই জায়গায় অব্রাম সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এক যজ্ঞবেদি করলেন, যিনি তাঁকে দর্শন দিয়েছিলেন। 
২)আদিপুস্তক ১৩ অধ্যায়ঃ 14অব্রাম থেকে লোট আলাদা হলে পর সদাপ্রভু অব্রামকে বললেন, “চোখ তুলে এই যে জায়গায় তুমি আছ, এই জায়গা থেকে উত্তর দক্ষিণে ও পূর্ব পশ্চিমে দেখো; 15কারণ এই যে সমস্ত দেশ তুমি দেখতে পাচ্ছ, এটা আমি তোমাকে ও যুগে যুগে তোমার বংশকে দেব।
৩)আদিপুস্তক ১৫ অধ্যায়ঃ 18সেই দিন সদাপ্রভু অব্রামের সঙ্গে নিয়ম স্থির করে বললেন, “আমি মিশরের নদী থেকে মহানদী, ফরাৎ নদী পর্যন্ত এই দেশ তোমার বংশকে দিলাম; 19কেনিয়, কনিষীয়, কদমোনীয়, 20হিত্তীয়, পরিষীয়, রফারীয়, 21ইমোরীয়, কনানীয়, গির্গাশীয় ও যিবুষীয় লোকদের দেশ দিলাম।” 
৪)আদিপুস্তক ১৭ অধ্যায়ঃ 8আর তুমি এই যে কনান দেশে বাস করছ, এর সম্পূর্ণ আমি তোমাকে ও তোমার ভাবী বংশকে চিরস্থায়ী অধিকারের জন্য দেব, আর আমি তাদের ঈশ্বর হব।” 
৫)আদিপুস্তক ২৬ অধ্যায়ঃ 3এই দেশে বসবাস কর; আমি তোমার সঙ্গে থেকে তোমাকে আশীর্বাদ করব, কারণ আমিই তোমাকে ও তোমার বংশকে এই সব দেশ দেব এবং তোমার বাবা অব্রাহামের কাছে যে শপথ করেছিলাম, তা সফল করব। 
৬) দ্বিতীয় বিবরণ ৩৪ অধ্যায়ঃ 1মোশি মোয়াবের সমভূমি থেকে নবো পর্বতে, যিরীহোর সামনে অবস্থিত পিস্গা শৃঙ্গে উঠলেন। আর সদাপ্রভু তাকে সমস্ত দেশ, দান পর্যন্ত গিলিয়দ 2এবং সমস্ত নপ্তালি, আর ইফ্রয়িম ও মনঃশির দেশ এবং পশ্চিমে মহাসমুদ্র পর্যন্ত যিহূদার সমস্ত দেশ 3এবং দক্ষিণ দেশ ও সোয়র পর্যন্ত তাল গাছের শহর যিরীহোর উপত্যকার অঞ্চল দেখালেন। 4আর সদাপ্রভু তাকে বললেন, “আমি যে দেশের বিষয়ে শপথ করে অব্রাহামকে, ইস্হাককে ও যাকোবকে বলেছিলাম, আমি তোমার বংশকে সেই দেশ দেব, এ সেই দেশ; আমি ওটা তোমাকে চোখে দেখালাম, কিন্তু তুমি পার হয়ে ঐ জায়গা যাবে না।”

মন্তব্যঃ কনান(ইস্রায়েল)দেশের প্রতিশ্রুতি ইশ্মায়েলকে দেয়া হয় নাই।শুধুমাত্র ইসহাককে দেয়া হয়েছে। এখানে আদিপুস্তক ১৫ অধ্যায়ের ১৮ পদে মিশরের নদী থেকে ইউফ্রেতিস নদী পর্যন্ত সীমাকে অনেকে প্রশ্নের মাঝে আনতে পারে কারণ ইস্রায়েলের সীমানা এমন সচরাচর ছিল না বলেই আমরা জানি। আমাদের বুঝতে হবে ঈশ্বর এখানে ইস্রায়েল জাতির সর্বোচ্চ অধিকারের বিষয়ে বলেছেন(২য় বংশাবলী ৯ এর ২৬ পদ)। কিন্তু জর্ডান নদীর পশ্চিম পাড়ের এই ভূমিই যে মূলত ইস্রায়েলের জন্য নির্ধারিত তা তিনি আদিপুস্তক ১৩ অধ্যায়ের ১৪ পদেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। আবার আদিপুস্তক ১৫ অধ্যায়ের ১৯ ও ২০ পদের জাতিগুলোর মধ্যে ৭ টি জাতির উল্লেখ আমরা দ্বিতীয় বিবরণ ৭ এর ১ এ পাই যাদের ইস্রায়েলীদের চেয়ে শক্তিশালী ও সংখ্যায় বেশী বলে উল্লেখ করা হয়েছে । এই জাতিগুলো সবাই কনান দেশের(ইস্রায়েলের) অধিবাসী ছিল। বাকী তিনটি জাতি শক্তি সামর্থ্যের কম ছিল অথবা আব্রাহাম থেকে মোশির সময়ের(যেহেতু দ্বিতীয় বিবরণ লেখার সময় আব্রাহামের প্রায় চারশ পঞ্চাশ বছর পরের) মধ্যে বিলুপ্ত বা হারিয়ে গিয়েছিল। মোশিকে জর্ডান নদী পার হয়ে ইস্রায়েলে( দ্বিতীয় বিবরণ ঢুকতে না দেয়া থেকে আমরা বুঝতে পারি চীরকালীন ইস্রায়েল দেশ বলতে ঈশ্বর বর্তমান ইস্রায়েলের সীমানাকেই বুঝিয়েছেন। 

ঘ)আশীর্বাদের বিষয়ঃ ব্যবস্থার /নিয়মের /শরীয়তের অধিকার

ইস্মায়েল(ইসমাইল) সম্পর্কে বাইবেলের রেফারেন্সঃ কোন উল্লেখ নাই।

ইসহাক সম্পর্কে বাইবেলের রেফারেন্সঃ

 আদিপুস্তক ১৭ অধ্যায়ঃ 1আব্রামের নিরানব্বই বছর বয়সে সদাপ্রভু তাঁকে দর্শন দিলেন ও বললেন, “আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, তুমি আমার সামনে যাতায়াত করে সিদ্ধ হও। 2আর আমি তোমার সঙ্গে নিজের নিয়ম স্থির করব ও তোমার প্রচুর পরিমাণে বংশ বৃদ্ধি করব।” 3তখন অব্রাম উপুড় হয়ে পড়লেন এবং ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে আলাপ করে বললেন, 4“দেখ, আমিই তোমার সঙ্গে নিজের নিয়ম স্থির করছি, তুমি বহু জাতির আদিপিতা হবে। 5তোমার নাম অব্রাম আর থাকবে না, কিন্তু তোমার নাম অব্রাহাম হবে; কারণ আমি তোমাকে বহু জাতির আদিপিতা করলাম। 6আমি তোমাকে অত্যাধিক পরিমাণে ফলবান করব এবং তোমার থেকে বহুজাতি সৃষ্টি করব; আর রাজারা তোমার থেকে সৃষ্টি হবে। 7আমি তোমার সঙ্গে ও পুরুষানুক্রমে তোমার ভাবী বংশের সঙ্গে যে নিয়ম স্থাপন করব, তা চিরকালের নিয়ম হবে; কারণ আমি তোমার ঈশ্বর ও তোমার ভাবী বংশের ঈশ্বর হব। ……………………………… 18পরে অব্রাহাম ঈশ্বরকে বললেন, “ইশ্মায়েলই তোমার সামনে বেঁচে থাকুক।” 19তখন ঈশ্বর বললেন, “তোমার স্ত্রী সারা অবশ্য তোমার জন্য ছেলে প্রসব করবে এবং তুমি তার নাম ইসহাক [হাস্য] রাখবে, আর আমি তার সঙ্গে আমার নিয়ম স্থাপন করব, তা তার আগামী বংশধরদের পক্ষে চিরস্থায়ী নিয়ম হবে। 20আর ইস্মায়েলের বিষয়েও তোমার প্রার্থনা শুনলাম; দেখ, আমি তাকে আশীর্বাদ করলাম এবং তাকে ফলবান করে তার প্রচুর পরিমাণে বংশ বৃদ্ধি করব; তা থেকে বারোটি রাজা সৃষ্টি হবে ও আমি তাকে বড় জাতি করব। 21কিন্তু আগামী বছরের এই ঋতুতে সারা তোমার জন্য যাকে প্রসব করবে, সেই ইসহাকের সঙ্গে আমি আমার নিয়ম স্থাপন করব।” 22পরে কথোপকথন শেষ করে ঈশ্বর অব্রাহামের কাছ থেকে উপরে চলে গেলেন। 

মন্তব্যঃ সন্দেহাতীতভাবেই ইসহাকের বংশের মধ্য দিয়ে ঈশ্বর চিরস্থায়ী ব্যবস্থা/শরীয়ত/নিয়মের ধারা চালু রেখেছেন। ইসহাকের পরে বহু নবীর দ্বারা ইস্রায়েল জাতিকে পরিচালনা করা ও সর্বশেষে ইয়েহশুয়া হা মাসিয়াখ(যীশু খ্রীষ্ট) এর মধ্য দিয়ে এই শরীয়তের পূর্ণতা ও সকল জাতির কাছে ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও দয়া এসেছে। ইসহাকের বংশে আগমণ করে যীশু খ্রীষ্ট এই শরীয়তকে পূর্ণতা দিয়েছেন।

ঙ)আশীর্বাদের বিষয়ঃ পৃথিবীর সকল জাতি কার বংশের মধ্য দিয়ে আশীর্বাদ/রহমত পাবে?

ইস্মায়েল(ইসমাইল) সম্পর্কে বাইবেলের রেফারেন্সঃ কোন উল্লেখ নাই।

ইসহাক সম্পর্কে বাইবেলের রেফারেন্সঃ 
আদিপুস্তক ২২ অধ্যায়ঃ 18 আর তোমার বংশে পৃথিবীর সব জাতি আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে; কারণ তুমি আমার বাক্যে পালন করেছ।“ আদিপুস্তক ২৬ অধ্যায়ঃ 1আগে অব্রামের দিনের যে দূর্ভিক্ষ হয়, তাছাড়া দেশে আর এক দূর্ভিক্ষ দেখা দিল। তখন ইসহাক গরারে পলেষ্টীয়দের রাজা অবীমেলকের কাছে গেলেন। 2সদাপ্রভু তাঁকে দর্শন দিয়ে বললেন, “তুমি মিশর দেশে নেমে যেও না, আমি তোমাকে যে দেশের কথা বলব, সেখানে থাক; 3এই দেশে বসবাস কর; আমি তোমার সঙ্গে থেকে তোমাকে আশীর্বাদ করব, কারণ আমিই তোমাকে ও তোমার বংশকে এই সব দেশ দেব এবং তোমার বাবা অব্রাহামের কাছে যে শপথ করেছিলাম, তা সফল করব। 4আমি আকাশের তারাদের মতো তোমার বংশ বৃদ্ধি করব, তোমার বংশকে এই সব দেশ দেব ও তোমার বংশে পৃথিবীর যাবতীয় জাতি আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে। 

 সব জাতিকে আশীর্বাদ/রহমত করা হবে ইসহাকের বংশের মধ্য দিয়ে। এ ব্যাপারে ইস্মায়েলের কোন উল্লেখই ঈশ্বর করেননি। এই রহমত ইসহাকের বংশে মসীহ আসার মধ্য দিয়ে পূর্ণতা পেয়েছে। 

শেষ কথাঃ

পরিশেষে এটাই বলা যায় যে, ১)বংশ বলে আখ্যায়িত হওয়া, ২)বহুবংশের আশীর্বাদ, ৩)কনান দেশের অধিকার, ৪)ব্যবস্থা/নিয়ম/শরীয়তের অধিকার, ৫)রহমতের/আশীর্বাদের অধিকার এই পাঁচটি আশীর্বাদই ইসহাক পেয়েছিলেন আর ইস্মায়েল শুধুমাত্র বহুবংশের আশীর্বাদই পেয়েছিলেন। এর মানে দাড়ায় শরীয়ত ও রহমতের ভাগীদার হতে হলে ইস্মায়েলের বংশধরদেরও অন্য সকল জাতির মত ইসহাকের বংশের কাছেই আসতে হবে ।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: