Sunday, October 25, 2020

পারাক্লিতস কে?

লেখকঃ পাষ্টর জনসন সরকার।

দাবিঃ  পারাক্লিতস  হলেন হযরত মুহাম্মদ           

ত্তরঃ অনেক আগে থেকেই অনেক মুসলিম প্রচারকরা দাবি করে আসছেন যে, হযরত মুহাম্মদ হলেন "পারাক্লীতস" পারাক্লিতস হলো গ্রীক শব্দ যার অর্থ হলোঃ সহায়, পক্ষমর্থনকারী ,উকিল প্রভু যীশু খ্রীষ্ট বলেছেন, "আমি পিতার নিকটে নিবেদন করিব, এবং তিনি আর এক সহায় তোমাদিগকে দিবেন; যেন তিনি চিরকাল তোমাদের সংগে থেকেন; তিনি সত্যের আত্মা"[যোহন ১৪:১৫;]

প্রভু যীশু খ্রীষ্ট বলেছেন, আর এক সহায় ["পারাক্লীতস"] এর আসবার কথা, কিন্তু দাওয়া প্রচারকরা দাবি করেন এখানে সহায়ের কথা বলা হচ্ছে না বরং এখানে হযরত মুহাম্মদের বিষয়ে বলা হয়েছে

["আমি পিতার নিকটে নিবেদন করিব, এবং তিনি আর এক "মুহাম্মদ" তোমাদিগকে দিবেন;"]প্রশ্ন উঠে এখানে যদি বলা হয় আরেক জন "মুহাম্মদের কথা" তবে প্রথম মুহাম্মদ টি কে? কিন্তু পবিত্র আত্মার সাথে এটি মিলে যায়

 "সেই সহায় যেন চিরকাল তোমাদের [খ্রীষ্টনদের] সংগে থাকেন"

এখন প্রশ্ন হলো হযরত মুহাম্মদ কি চিরকাল জীবিত ছিলেন? আর যদি তিনি চিরকাল জীবিত না থাকতে পারেন তবে তিনি কিভাবে চিরকাল প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুসারিদের সংগে থাকবেন? কিন্তু পবিত্র আত্মার সাথে এটি মিলে যায় কারন পবিত্র আত্মা চিরকাল প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুসারিদের সংগে থাকতে পারেন যা কোন ব্যক্তির পক্ষে অসম্ভব

 "তিনি সত্যের আত্মা"

কুরআনে কোথাও কি বলা হয়েছে হযরত মুহাম্মদ সত্যের আত্মা? না গোটা কুরআনে কোথাও বলা হয় নি যে,  হযরত মুহাম্মদ ছিলেন সত্যের আত্মা সাধারন অর্থে কোন মানুষকে আত্মা বলাটাও ভূল কিন্তু পবিত্র আত্মার সাথে এটি মিলে যায় কারন প্রভু যীশু খ্রীষ্ট বলেছেন, "আমি...সত্য" [যোহন ১৪:;] সেই জন্য পবিত্র বাইবেলে  ঈশ্বরের আত্মকে খ্রীষ্টের আত্মা বলেও উল্লেখ করা হয়েছে [রোমীয় :;] তাই সত্যের আত্মা বলতে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আত্মাকেও বোঝায় কুরাআনে কোন স্থানে হযরত মুহাম্মদকে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আত্মা বলে উল্লেখ করা হয় নিতবে তিনি কিভবে সত্যের আত্মা হতে পারেন?

"জগত তাকে গ্রহন করিতে পারে না, কেননা সে তাঁহাকে দেখে না, তাঁহাকে জানেও না; কিন্তু তোমরা তাঁহাকে জান, কারন তিনি তোমাদের অন্তরে থাকিবেন"[যোহন ১৪:১৭;]

"জগত তাকে গ্রহন করিতে পারে না"

ইসলামের ইতিহাস পড়লে দেখা যায় হযরত মুহাম্মদ জীবিত থাকা অবস্থায় তার অনেক অনুসারি করে ফেলেছিলেন এবং তিনি অনেক খ্যাতি অর্জন করেছিলেন কিন্তু বাক্যে লেখা আছে, সেই সহায়কে মানুষেরা গ্রহন করে না অথচ হযরত মুহাম্মদকে অনেক মানুষ গ্রহন করেছিল তার জীবনদশাতেই তাই এই কথাটি তার সংগে মেলে না

"কেননা সে তাঁহাকে দেখে না তাঁহাকে জানেও না"

এখানে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে এই জগতের কেউ তাকে দেখতে পায় না, হযরত মুহাম্মদ একজন দৃশ্যমান ব্যক্তি ছিলেন তাই সকলে তাকে খালি চোখেই দেখতে পেতেন এবং তিনি তার সময়ে বেশ পরিচিতি লাভ করেছিলেন তাই এই ভবিষ্যৎবানীর একটিও কথা তার সংগে  মেলে না

"আমি তোমাদিগকে অনাথ রাখিয়া যাইব না"[যোহন ১৪:১৮;]

প্রভু যীশু খ্রীষ্ট পবিত্র আত্মাকে সহায়/অভিভাবক হিসাবে উল্লেখ করেছেন, কিন্তু কুরআনে সুস্পষ্টভাবে লেখা আছে , হযরত মুহাম্মদ কারো অভিভাবক নন[সূরা ১০ ইউনুস আয়াত ১০৯;] তাই যিনি নিজেই অভিভাবক [আরবীঃ বিওয়াকীল]  হতে অস্বীকার করেছেন তিনি কিভাবে সেই সহায় হতে পারেন? অন্যদিকে পবিত্র বাইবেলের দৃষ্টিতে আমারা দেখতে পাই যখন প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুসারীরা তার অনুপস্থিতে অনাথ, অসহায় হয়ে পড়েছিল তখন পবিত্র আত্মা তাদের সহায় হয়ে চিরকালের জন্য জগতে নেমে এসেছিলেন [ প্রেরিত২:-;]

"কিন্তু সেই সহায়, পবিত্র আত্মা, যাঁহাকে পিতা আমার নামে পাঠাইয়া দিবেন, তিনি সকল বিষয়ে তোমাদিগকে শিক্ষা দিবেন এবং আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা বলিয়াছি, সেই সকল স্মরন করাইয়া দিবেন"[যোহন১৪:২৬;]

প্রভু যীশু খ্রীষ্ট এখানে সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে সেই সহায় আত্মা হযরত মুহাম্মদ নন বরং পবিত্র আত্মা প্রভু যীশু মৃত্যুকে জয় করার পর তার অনুসারিদের বলেছিলেন ,"পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে আসিলে তোমরা শক্তি প্রাপ্ত হইবে; আর তোমরা যিরূশালেমে, সমুদয় যিহূদিয়া শমরিয়া দেশে, এবং পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত আমার সাক্ষী হইবে"[প্ররিত :;] পবিত্র বাইবেল বলে, "তাঁহারা[ শিষ্যরা] সকলে পবিত্র আত্মায় পূর্ন  হলেন"[প্রেরিত :;] এবং তিনি বলেছেন ,"সেই সত্যের আত্মা আমার (প্রভু যীশু খ্রীষ্টের) নামে আসবেন"

পবিত্র আত্মা বিশ্বাসিদের হৃদয়ে "যীশু" নামে প্রকাশিত হবেন, হযরত মুহাম্মদের নাম কি যীশু ছিল নাকি তিনি যীশুর নামে প্রকাশিত হয়েছিলেন? নিশ্চইয় নয়।

প্রভু যীশু খ্রীষ্ট বলেছেন, “সত্যের আত্মা পিতার মধ্য হতে বের হয়ে আইসেন” অর্থাৎ তিনি পিতা ঈশ্বরের অংশঃ  “যাঁহাকে আমি পিতার নিকট হইতে তোমাদের কাছে পাঠাইয়া দিব, সত্যের সেই আত্মা, যিনি পিতার নিকট হইতে বাহির হইয়া আইসেন- যখন সেই সহায় আসিবেন- তিনিই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিবেন।”[যোহন১৫:২৬;]

ঠিক তেমনি প্রভু যীশু খ্রীষ্ট নিজের ক্ষেত্রেও বলেছেন , “তিনি পিতার মধ্যে হতে বের হয়ে এসেছেন” অর্থাৎ তিনি পিতা ঈশ্বরের অংশঃ আমি পিতা হইতে বাহির হইয়াছি, এবং জগতে আসিয়াছি; আবার জগৎ পরিত্যাগ করিতেছি, এবং পিতার নিকটে যাইতেছি” [যোহন১৫:২৮;]

পুত্র এবং পবিত্র আত্মা উভয়ে পিতা হতে বের হয়ে এসেছেন তারা 'পিতা ঈশ্বরের জাত' আর সেই জন্যই খ্রীষ্টানরা ত্রিত্ববাদে বিশ্বাস করে হযরত মুহাম্মদ কি পিতা ঈশ্বরের মধ্যে হতে বের হয়ে এসেছিলেন? নিশ্চয়ই নয়।

 

সাধারন অভিযোগঃ পবিত্র আত্মা আগে থেকেই ছিল তবে সে সহায় পবিত্র আত্মা কি করে হতে পারে?

উত্তরঃ প্রভু যীশু খ্রীষ্ট এই পৃথিবীতে আসার আগে থেকেই ছিলেন কিন্তু একটা নিদৃষ্ট সময়ে তাকে এই জগতে প্রেরন করা হয়েছে যখন ইহুদিরা তাকে প্রশ্ন করল "তুমি কি অব্রাহামকে দেখিয়াছ? যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, সত্য,সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, অব্রাহামের জন্মের পূর্বাধি আমি আছি"[যোহন :৫৮;]

ঠিক তেমনি পবিত্র আত্মাও শুরু থেকেই আছেন কিন্তু  তাকে একটা নিদৃষ্ট সময়ে  এই জগতে প্রেরন করা হয়েছে প্রথম অস্থায় পবিত্র আত্মা ঈশ্বরের লোকেদের কাছে আসতেন এবং চলেও যেতেন[১শমূয়েল ১০:-১৩; ১৬:১৪;]

পবিত্র বাইবেল এটাও বলে যে একটা সময়ে পবিত্র আত্না সবার উপরে নেমে আসবেন [যোয়েল :২৮-২৯;] এবং পবিত্র বাইবেল আমাদেরকে এটাও সুস্পষ্টভাবে বলে যে পঞ্চাশত্তমীর দিনে এই ভবিষ্যৎবানীটি পূর্ন হয় এবং পবিত্র আত্মার যুগের সূচনা হয় [প্রেরিত :-; ১৭-১৮;]

ইহুদিরা যখন হযরত মুহাম্মদকে পবিত্র আত্মা নিয়ে প্রশ্ন করেছিল তখন হযরত মুহাম্মদ নিজেই বলতে পারেন নি যে পবিত্র আত্মাকে? 

সহি মুসলিম হাদিস একাডেমি নাম্বারঃ ৬৯৫২, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ২৭৯৪

৬৯৫২-(৩২/২৭৯৪) উমর ইবনু হাফস্ ইবনু গিয়াস (রহঃ) ..... আবদুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে এক ফসলি জমিতে চলছিলাম। সে সময় তিনি একটি খেজুর শাখার ছড়ির উপর ভর দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি ইয়াহুদীদের একটি দলের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন। তখন তারা একজন আরেকজনকে বলাবলি করতে লাগল, রূহ সম্বন্ধে তাকে প্রশ্ন করো। তাদের কেউ বলল, কি সন্দেহ তৈরি হয়েছে তোমাদের যে, তোমরা তাকে প্রশ্ন করবে? তোমাদের যেন এমন কথার সম্মুখীন না হতে হয়, যা তোমরা অপছন্দ করো। এরপরও তারা বলল, তাকে অবশ্যই প্রশ্ন করো। পরিশেষে তাদের কেউ উঠে গিয়ে তাকে রূহ সম্বন্ধে প্রশ্ন করল। রাবী বলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ রইলেন। তার কোন উত্তর দিলেন না। আমি বুঝতে পারলাম, তার উপর ওয়াহী অবতীর্ণ হচ্ছে। রাবী বলেন, আমি নিজের স্থানে দাঁড়িয়ে রইলাম। এরপর ওয়াহী অবতীর্ণ শেষ হলে তিনি বললেন, "তোমাকে তারা রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে; বলো, রূহ আমার প্রতিপালকের একটি আদেশ মাত্র এবং তোমাদের অতি নগণ্য জ্ঞান দেয়া হয়েছে" (সূরা আল ইসরা ১৭ঃ ৮৫)। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৮০২, ইসলামিক সেন্টার ৬৮৫৬)

https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=54050 

যিনি নিজেই বলতে পারনে না পবিত্র আত্মা সম্পর্কে তিনি কিভাবে নিজেই পবিত্র আত্না হতে পারেন? 

তাই কোন যুক্তিতেই প্রমানিত হয় না যেহযরত মুহাম্মদ সেই সত্যের আত্না



 


 


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: