Sunday, January 2, 2022

বাইবেলের সব নবী-রাসূল কি মুসলিম ছিল?

👉 মুসলিমদের দাবি হল, পূর্বের সকল নবী-রাসূল মুসলিম ছিল। মুসলিমগণের এক প্রবন্ধে আমরা পাই:

//বাইবেলে 'মুসলিম' শব্দের হিব্রু রূপ মেসহুল্লাম (Meshullam- מְשֻׁלָּם֙)
আরবিতে মুসলিম(muslim-مُسْلِمُ )। এর র্অথ-আনুগত্যকারী(devoted),আত্ম-সমর্পণকারী (self-surrnderd, surrenderd)কর্তা ইচ্ছাপূরণকারী, ভক্তি ইত্যাদি।আরবি ও হিব্রু সেমেটিক ভাষা।হিব্রু মেসহুল্লাম
(Meshullam-מְשֻׁלָּם֙) ও আরবি( مُسْلِمُ)মুসলিম উভয় শব্দ 'সালাম' থেকে যার আরেকটি অর্থ-শান্তি অর্জন করা।প্রকৃত অর্থ-ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য দ্বারা শান্তি অর্জন করা/কারী।
অতএব যে ঈশ্বরের ইচ্ছাপালন করে তাকে আরবিতে মুসলিম বলে//

জবাব:

প্রকৃতপক্ষে "মুসলিম" শব্দটাই হিব্রু থেকে চুরি করা হয়েছে পৃথক ধর্ম তৈরির জন্য। আরবি "মুসলিম" শব্দটি আসলে আরবি শব্দই নয়। হিব্রু থেকে আমদানি করে ঘষে মেজে পৃথক ধর্মের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। এরকম অসংখ্য হিব্রু, এ্যারামাইক শব্দ কুরআনে আরবির মধ্যে ঢোকানো হয়েছে!

লক্ষ্য করুন, যে "মুসলিম" শব্দটি হিব্রু থেকে চুরি করে ইসলামের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে, সেটি হিব্রুতে কী হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে?

হিব্রু מְשֻׁלָּם (Meshullam) এর অর্থ "the name of a number of Isr" অথবা "the name of seventeen Israelites";
অর্থাৎ ১৭ জন ইসরাইলীয় এর নাম।
source:

অর্থাৎ হিব্রু מְשֻׁלָּם (Meshullam) শব্দকে ১৭ জন ইসরাইলীয় এর নাম এর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষ কোনো আলাদা ধর্মকে উল্লেখ করতে অনুসারীদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়নি।

2Kings 22:3 (২ রাজাবলি ২২:৩) এর রেফারেন্সটাই দেখুন:

"রাজা যোশিয়ের রাজত্বকালের অষ্টাদশ বছরে, তিনি মশুল্লমের নাতি, অর্থাৎ **অৎসলিয়ের ছেলে** তথা তাঁর সচিব শাফনকে সদাপ্রভুর মন্দিরে পাঠালেন..."
(২ রাজাবলি ২২:৩, অনুবাদ: বাংলা সমকালীন সংস্করণ)

"Now it came to pass, in the eighteenth year of King Josiah, that the king sent Shaphan the scribe, the son of Azaliah, **the son of Meshullam,** to the house of the Lord..." 
(2 Kings 22:3 (NKJV))

তাহলে Meshullam শব্দটা মানুষের নামের ক্ষেত্রে বাইবেলে ব্যবহৃত হয়েছে। পৃথক ধর্মের অনুসারীর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়নি।

এখন, এই হিব্রু מְשֻׁלָּם (Meshullam) নামবাচক শব্দের অসংখ্য অর্থ রয়েছে। তার কিছু অর্থ "peaceable", "devoted" ইত্যাদির সাথে আরবি "ইসলাম" বা "মুসলিম" এর মিল থাকলেও এগুলো একমাত্র অর্থ নয়।
হিব্রু מְשֻׁלָּם (Meshullam) শব্দ - মূল শব্দ שָׁלַם (shalam) থেকে এসেছে যার অসংখ্য অর্থ বিদ্যমান, যেমনঃ
1) pay
2) repay,
3) restore,
4) recompense,
5) render,
6) requite,
7) Perform,
8) make good,
9) prosper
10) finish ইত্যাদি (স্ক্রিনশটে দ্রষ্টব্য)

এক্ষেত্রে উপরে আরও দশটা অর্থ দেওয়া হল। তা মুসলিমরা কেবল একটি বা দুটি অর্থ নেয় কেন?

কারণ তারা যে এটা আলাদা একটা ধর্মের নামের সাথে ফিট করবে এজন্য!

অথচ এটা ধর্মের কোনো নামই নয়, বরং ১৭ জন ইসরাইলীয় এর নাম!

কুরআন - হিব্রু এবং এ্যারামাইক থেকে শব্দ চুরি করে লেখা! আর এটার সাথে রঙ চঙ মাখিয়ে পৃথক একখানা ধর্ম বানিয়ে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে!

👉 মুসলিমদের আরও দাবি হল, যীশু খ্রিস্ট নিজেও নাকি মুসলিম ছিলেন! তাদের লেখনিতে তারা উল্লেখ করেছে:

//যিশু/ঈসা (আ:)বলেন-
Darby’s English Translation
5:30 I cannot do anything of myself; as I hear, I judge, and my judgment is righteous, because I do not seek my will, but the will of him that has sent me.
(John 5:30)
বাংলা-আমি নিজের থেকে কিছুই করতে পারিনা,আমি যা শুনি তাই বিচার করি এবং আমার বিচার নায্য, কারন আমি নিজের ইচ্ছা পালন করি না কেবল তাঁর ইচ্ছা পালন করি যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।
(যোহন ৫:৩০)
সুতরাং যিশু(ঈসা)সহ অন্যান্য নবী-রাসূলরাও মুসলিম//

জবাব:

মুহাম্মাদের উম্মত বাইবেলের এই পদ দেখিয়ে দাবি করে যে, খ্রিস্ট নাকি মুসলমান ছিলেন!

"আমি আমার ইচ্ছেমতো কিছুই করতে পারি না। আমি যেমন শুনি, কেবল তেমনই বিচার করি। আর আমার বিচার ন্যায্য কারণ আমি নিজের নয়, কিন্তু যিনি আমাকে প্রেরণ করেছেন, তাঁরই ইচ্ছা পালনের চেষ্টা করি।"
(যোহন ৫:৩০, অনুবাদ: বাংলা সমকালীন সংস্করণ)

তাদের দাবি হল, খ্রিস্ট স্রষ্টার ইচ্ছায় কাজ করেছেন, আর কেউ স্রষ্টার নিকট নিজের ইচ্ছাকে সমর্পণ করলে আরবিতে তাকে বলা হয় মুসলিম! কিন্তু যীশু নিজে এর কী ব্যাখ্যা দিয়েছেন?

আসুন দেখি:

"যীশু তাদের উত্তর দিলেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যে ব্যক্তি পাপ করে, সে পাপেরই দাসত্ব করে। কোনও দাস *পরিবারে* স্থায়ী জায়গা পায় না, কিন্তু *পরিবারে পুত্রের স্থান চিরদিনের।*
তাই *পুত্র যদি তোমাদের মুক্ত করেন,* তাহলেই তোমরা প্রকৃত মুক্ত হবে।”" (যোহন ৮:৩৪-৩৬ (BCV))

এখানে খেয়াল করুন - যীশু শিক্ষা দেওয়ার সময় তুলনা কীভাবে পেশ করছেন: "কোনও দাস পরিবারে স্থায়ী জায়গা পায় না, কিন্তু পরিবারে পুত্রের স্থান চিরদিনের"; অর্থাৎ এখানে খ্রিস্ট নিজেকে "পুত্র" এবং "পরিবার" এর সাথে তুলনা করেছেন আর তারপর নিজেকে মুক্তিদাতা হিসেবে ইঙ্গিত করেছেন। আর এই পুত্র এর সম্পর্ক কার সাথে?

যীশু নিজেই বলেন, "তাই এখন *পিতা, জগৎ সৃষ্টির পূর্বে তোমার কাছে* আমার যে মহিমা ছিল, তোমার সান্নিধ্যে আমাকে সেই মহিমায় ভূষিত করো।" (যোহন ১৭:৫ (BCV))

অর্থাৎ, বিশ্বজগৎ সৃষ্টির আগে থেকেই পিতা ঈশ্বর এবং যীশু খ্রিস্টের মধ্যে পিতা-পুত্রের সম্পর্ক বিদ্যমান এবং তা যেন এক পরিবারের মত! অর্থাৎ যীশু এবং পিতা ঈশ্বরের সম্পর্ক হল অনন্ত প্রেমের সম্পর্ক! সন্তান যেমন মায়ের আজ্ঞা পালন করে ভালবাসার প্রকাশস্বরূপ, তেমনি যীশু খ্রিস্ট, পিতা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করেন পিতা-পুত্রের অনন্ত প্রেমের সম্পর্কস্বরূপ! এতে অনন্ত অস্তিত্বের প্রকাশের দ্বারা খ্রিস্টের ঈশ্বরত্বই প্রমাণিত হয়, মুসলমানত্ব প্রমাণিত হয় না!
==========================================
- MyBeloved Yashu

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: