Friday, October 8, 2021

ঈশ্বর করুণা করেন এবং করেন না?

 

 লেখকঃ পাষ্টর জনসন সরকার।

জাবাবঃ সমালোচক দাবি করেছেন বাইবেলের ঈশ্বর করুণা করেন নাকি করেন না? তাদের যুক্তিটি এমন যে ঈশ্বর যদি করুণা করেন তবে তিনি কাউকে শাস্তি দিতে পারবেন না আর যদি তিনি  কাউকে শাস্তি দেন তবে  তিনি কাউকে করুণা করতে পারবেন না। যে কোন ব্যক্তির কাছে বিষয়টি অযৌক্তিক মনে হতে পারে।

পবিত্র বাইবেলে লেখা আছে, “সদাপ্রভু, সদাপ্রভু, স্নেহশীল ও কৃপাময় ঈশ্বর, ক্রোধে ধীর এবং দয়াতে ও সত্যে মহান; সহস্র সহস্র [পুরুষ] পর্যন্ত দয়ারক্ষক। অপরাধের, অধর্মের ও পাপের ক্ষমাকারী; তথাপি তিনি অবশ্য [পাপের] দণ্ড দেন;পুত্র পৌত্রদের উপরে, তৃতীয় ও চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত,তিনি পিতৃগণের অপরাধের প্রতিফল বর্তান।[1]

অর্থাৎ সদাপ্রভু ঈশ্বর [ইয়াওয়ে এলোহীম] তিনি স্নেহশীল ও কৃপাময় ঈশ্বর তিনি “ক্রোধে ধীর” এটা তাঁর বৈশিষ্ট তিনি ভালবাসেন আবার কেউ অন্যায় করলে তাকে শাসন করেন। স্রষ্টার ত এমনি গুনাবলি থাকা স্বাভাবিক! যারা তাকে ভালবাসে তার নিয়ম রক্ষা করে তাদের তিনি ভালবাসেন[2] এবং যারা তার নিয়ম জেনেও তা পালন করে না তাদের তিনি শাস্তি দেন।[3]

সমালোচক যিরমিয়১৩ অধ্যায়১৪ ভার্সকে মূলত ভূল ভাবে উপস্থাপন করেছেন আমরা যদি মূল কনটেক্সেট পড়ি তবে সমালোচকের কার সাজি ধরা পড়ে যায়ঃ

এই যে দুষ্ট জাতি আমার কথা শুনিতে অস্বীকার করে, আপন আপন হৃদয়ের কঠিনতা অনুসারে চলে, এবং অন্য দেবগণের সেবা ও তাহাদের কাছে প্রণিপাত করিবার জন্য তাহাদের অনুগামী হয়, তাহারা এই পটিকার ন্যায় হইবে, যাহা কোন কার্যের যোগ্য নয়। কেননা, সদাপ্রভু কহেন, মনুষ্যের কটিদেশে যেমন পটিকা জড়ান থাকে, তদ্রূপ আমি সমস্ত ইস্রায়েল-কুলকে ও সমস্ত যিহূদা-কুলকে আপনাতে জড়াইয়াছিলাম, যেন তাহারা আমার উদ্দেশে প্রজাবর্গ, এবং কীর্তি, প্রশংসা ও শোভাস্বরূপ হয়; কিন্তু তাহারা শুনিতে চাহিল না। অতএব তুমি তাহাদিগকে এই কথা বল, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা কহেন, প্রত্যেক কলস দ্রাক্ষারসে পূর্ণ করা যাইবে; তাহাতে তাহারা তোমাকে বলিবে, প্রত্যেক কলস যে দ্রাক্ষারসে পূর্ণ করা যাইবে, তাহা আমরা কি জানি না? তখন তুমি তাহাদিগকে বলিও, সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, আমি এই দেশনিবাসী সমস্ত লোককে, অর্থাৎ দায়ূদের সিংহাসনে উপবিষ্ট রাজগণকে এবং যাজকগণ, ভাববাদিবর্গ ও যিরূশালেম-নিবাসী সমস্ত লোককে মত্ততায় পূর্ণ করিব। আর আমি একজনকে অন্য জনের বিরুদ্ধে, আর পিতাদিগকে ও পুত্রদিগকে একসঙ্গে আছড়াইব, ইহা সদাপ্রভু কহেন; আমি মমতা করিব না, কৃপা করিব না, করুণা করিব না; তাহাদিগকে বিনষ্ট করিব।[4]

মূল কনটেক্সেট অনুসারে পিতা ঈশ্বর  এই কথা বলছেন অবাধ্য লোকেদের কাছে যারা তার নিময় অনুসারে চলে না বরং নিজদের ইচ্ছা অনুসারে চলে তার পাশাপাশি তারা মূর্তিপূজা করে। তাদের ক্ষেত্রে এই কথা তিনি বলেছেন যা সম্পুর্ন যৌক্তিক বিষয়।

কুরআনের আল্লাহর ক্ষেত্রে যদি আমরা এই যুক্তি পেশ করি তবে তাদের ঈশ্বর বিপদে পড়ে যান! কুরআনে আল্লাহর ক্ষেত্রে একটি কথা বারংবার  ব্যবহৃত হয়েছে “শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।[5]

বাস্তবেই কি আল্লাহ পরম করুনাময় ও অতি দায়ালু?

“তোমার পালনকর্তা যাদের উপর রহমত করেছেন, তারা ব্যতীত সবাই চিরদিন মতভেদ করতেই থাকবে এবং এজন্যই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আর তোমার আল্লাহর কথাই পূর্ণ হল যে, অবশ্যই আমি জাহান্নামকে জ্বিন ও মানুষ দ্বারা একযোগে ভর্তি করব।[6]

“আমি ইচ্ছা করলে প্রত্যেককে সঠিক দিক নির্দেশ দিতাম; কিন্তু আমার এ উক্তি অবধারিত সত্য যে, আমি জিন ও মানব সকলকে দিয়ে অবশ্যই জাহান্নাম পূর্ণ করব।”[7]

 উপরের আয়াতগুলো পড়ে কি মনে হচ্ছে আল্লাহ পরম করুনাময় এবং অতি দয়ালু? যিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে কিছু মানুষ এবং কিছু জ্বিনদের জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করে রেখেছেন। কুরআন দ্বারাই প্রমানিত হয় আল্লাহ পরম করুনাময় এবং অতি দয়ালু নন।



[1] যাত্রাপুস্তক৩৪:৬;

[2] যাত্রাপুস্তক ২০:৬;

[3] যাত্রাপুস্তক২০:৫;

[4]  যিরমিয়১৩:১০-১৪;

[5] সূরা১:১;

[6] সূরা১১:১১৯;

[7] সূরা ৩২:১৩;


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: