👉 Youth-দের জন্য মহা-আজ্ঞা!
দশ আজ্ঞার সপ্তম আজ্ঞাটি হল (অনেকে ষষ্ঠ আজ্ঞাও ধরে থাকেন):
"ব্যভিচার করিও না।"
(যাত্রাপুস্তক ২০:১৪, অনুবাদ: কেরী)
আর আমরা গ্যারান্টি সহকারে বলতে পারি - এই আজ্ঞাটি যথাযথভাবে পালন করলে একজন Youth এর জীবন বদলে যেতে বাধ্য!
এক্ষেত্রে এই আজ্ঞাটিকে আরও কিছুটা বোঝা প্রয়োজন।
প্রভু যীশু খ্রিস্ট স্বয়ং আমাদেরকে এই আজ্ঞাটি ব্যাখ্যা করে দিয়ে গেছেন।
খ্রিস্ট তাঁর বচনে উল্লেখ করেছেন:
"...কেউ যদি কোনো নারীর প্রতি কামলালসা নিয়ে দৃষ্টিপাত করে, সে তক্ষুনি মনে মনে তার সঙ্গে ব্যভিচার করে।" (মথি ৫:২৮ (BCV))[1]
লক্ষ্যণীয়, এখানে খ্রিস্ট দুটি বিশেষ বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন - ১) দৃষ্টি, ২) মন।
দৃষ্টি থেকে বাহ্যিক জগতের চিত্র মস্তিষ্কে প্রবেশ করে; একারণে খ্রিস্ট আরও বলেন:
"চোখ শরীরের প্রদীপ। তোমার দুই চোখ যদি নির্মল হয়, তাহলে তোমার সমস্ত শরীর আলোময় হয়ে উঠবে। কিন্তু তোমার চোখ যদি মন্দ হয়, তোমার সমস্ত শরীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে। তোমাদের ভেতরের আলো যদি অন্ধকারময় হয়ে ওঠে, তবে সেই অন্ধকার কতই না ভয়ংকর!" (মথি ৬:২২-২৩ (BCV))
কিন্তু ব্যভিচারের মূল কেন্দ্রস্থল চোখ নয়, তা হল হৃদয় বা, মন! একারণে যীশু মনকে নির্দেশ করে বলেন, "...মানুষের হৃদয় থেকে উৎপন্ন হয় কুচিন্তা... ব্যভিচার, বিবাহ-বহির্ভূত যৌনাচার..." (মথি ১৫:১৯ (BCV))
অর্থাৎ মানব মন হল ব্যভিচারের মূল কেন্দ্রস্থল। বাহ্যিক বিভিন্ন চিত্র, শব্দ, স্পর্শ প্রভৃতি মনের সেই অভিলাষ পূরণের ক্ষেত্রে উপভোগের উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আর এক্ষেত্রে এটি মনে রাখা প্রয়োজন যে, বাপ্তিস্ম নিয়ে নবজন্ম লাভ করলেও এই অভিলাষ ধ্বংস হয়ে যায় না! পবিত্র আত্মার সংস্পর্শ এই অভিলাষকে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রাখতে পারে, কিন্তু অভিলাষকে ধ্বংস করে দেয় না! এর কারণ হল, কাম-প্রবৃত্তি মানব প্রকৃতির অংশবিশেষ - যা মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বজায় থাকে যতক্ষণ না এই দেহ মৃত্যুবরণ করে!
এক্ষেত্রে তাই দুটি বিষয় উল্লেখযোগ্য:
এক, বাহ্যিক চিত্র যখন দৃষ্টির মাধ্যমে চোখ হতে মস্তিষ্কে প্রবেশ করে, তখন যার হৃদয় যতটা পবিত্র, তার প্রতিক্রিয়া, ব্যবহারও ততটা উত্তম হয়। অর্থাৎ এক্ষেত্রে প্রথম বিষয়টি হল হৃদয়ের পবিত্রতা যার ইঙ্গিত খ্রিস্ট মথি ৫:২৮, মথি ১৫:১৯ প্রভৃতি স্থানে উল্লেখ করেছেন।
দুই, প্রবৃত্তিগত অভিলাষ যেহেতু মৃত্যু পর্যন্ত সক্রিয় থাকে, তাই এটিও জরুরি যে, একজন বিশ্বাসী তার ইন্দ্রিয়গুলোকেও নিয়ন্ত্রণ করবে।
মথি ৫:২৯-৩০ পদে খ্রিস্ট উদাহরণ হিসেবে "ডান চোখ" ও "ডান হাতকে" ব্যবহার করেছেন যার সাথে দুটি ইন্দ্রিয় "চোখ" ও "ত্বক" এর নিয়ন্ত্রণ তথা "দৃষ্টি" ও "স্পর্শ" এর নিয়ন্ত্রণ জড়িত।
তবে এটি যে পুরো ৫টি ইন্দ্রিয়ের নিয়ন্ত্রণকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পারি সাধু পৌল এর ব্যাখ্যা থেকে যেখানে তিনি বলেন:
"...যে যৌন-পাপ করে, সে তার নিজের শরীরের বিরুদ্ধেই পাপ করে" (১করিন্থীয় ৬:১৮ (BCV))
আর ৫টি ইন্দ্রিয় সমস্ত শরীর জুড়েই বিরাজ করে বিধায় এখানে সমস্ত ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রণের শিক্ষা চলে আসবে।
অর্থাৎ সহজ কথায় বললে, দশ আজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত ব্যভিচার পরিত্যাগের আজ্ঞার মূল শিক্ষাতে আমরা পাই:
১) আধ্যাত্মিক পথে চলার মাধ্যমে হৃদয়কে পবিত্র করা;
২) পঞ্চইন্দ্রিয়কে অপবিত্র বিষয়ের উপভোগ থেকে সরিয়ে রাখা।
এই দুটি বিষয় পালন করার মাধ্যমে যে কেউ ব্যভিচার হতে সহজেই দূরে থাকতে পারে।
তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই দুটি বিষয় পালনের জন্য কেবল আমাদের নিজেদের প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়; এখানে পবিত্র আত্মার সহায়তা একান্ত প্রয়োজন।
যখন পবিত্র আত্মার সংস্পর্শ এক্ষেত্রে যুক্ত হবে, তখন কেবলমাত্র ইন্দ্রিয়-সংযমের পরিবর্তে এটি ঐশ্বরিক প্রেমে পরিণত হবে!
ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর আজ্ঞাসমূহ হৃদয়ে ধারণের ও সেই অনুযায়ী চলার নিমিত্তে তাঁর আত্মা দ্বারা চালিত করুন।
আমেন।
.
.
.
__________________________________
ফুটনোট:
[1] BCV = Bengali Contemporary Version (বাংলা সমকালীন সংস্করণ)
======================================
- MyBeloved Yashu
0 coment rios: