ঈসা না ইয়েহশুয়া ?
যীশু নামটি হিব্রু ইয়েহশুয়া থেকে এসেছে। এর অর্থ "ইয়াওয়ে হলেন পরিত্রাণ"। আমরা যদি এই শব্দটির বিশ্লেষণ দেখি তাহলে নিম্নরূপে ব্যাখ্যা করতে পারি-
Strong's h3091
- Transliteration: Yehoshua
- Part of Speech: proper name, masculine; proper name, of a location; proper name
- Phonetic Spelling: yeh-ho-shoo'-ah
- Definition: "the LORD is salvation", Moses' successor, also the name of a number of Isr.
- Origin: Or Yhowshua {yeh-ho-shoo'-ah}; from Yhovah and yasha'; Jehovah-saved; Jehoshua (i.e. Joshua), the Jewish leader.
- Usage: Jehoshua, Jehoshuah, Joshua. Compare Howshea', Yeshuwa'.
- Translated as (count): Joshua (189), of Joshua (10), and Joshua (7), Now Joshua (3), to Joshua (3), But Joshua (2), And when Joshua (1), For Joshua (1), that Joshua (1), with Joshua (1).
বাইবেলে অনেক চরিত্রের নাম এলোহিম(ঈশ্বর) নিজে দিয়েছিলেন, যেমন আব্রাহাম, (আদিপুস্তক ১৭:৫)যার অর্থ " বহু জাতির পিতা", ইসহাক, (আদিপুস্তক ১৭:১৯) যার অর্থ "হাসি", ইস্মায়েল, (আদিপুস্তক ১৬:১১) যার অর্থ "এলোহিম(ঈশ্বর) শুনেন"। এইসব নামকরণের মধ্য দিয়ে অনেক ইংগিত ও বার্তা নিহিত ছিল।
একইরকমভাবে যীশুর ইয়েহশুয়া নামটিও এলোহিম(ঈশ্বর) স্বয়ং প্রদান করেছিলেন। মথি ১:২০-২১ ও লুক ১:৩০-৩১ পদে আমরা এর উল্লেখ পাই-

মথিলিখিত সুসমাচার। 1
20 তিনি এই সকল ভাবিতেছেন, এমন সময় দেখ, প্রভুর এক দূত স্বপ্নে তাঁহাকে দর্শন দিয়া কহিলেন, যোষেফ, দায়ূদ-সন্তান, তোমার স্ত্রী মরিয়মকে গ্রহণ করিতে ভয় করিও না, কেননা তাঁহার গর্ভে যাহা জন্মিয়াছে, তাহা পবিত্র আত্মা হইতে হইয়াছে; আর তিনি পুত্র প্রসব করিবেন,
21 এবং তুমি তাঁহার নাম যীশু [ত্রাণকর্ত্তা] রাখিবে; কারণ তিনিই আপন প্রজাদিগকে তাহাদের পাপ হইতে ত্রাণ করিবেন।
Matthew 1:20-21
[20]But while he thought on these things, behold, the angel of the Lord appeared unto him in a dream, saying, Joseph, thou son of David, fear not to take unto thee Mary thy wife: for that which is conceived in her is of the Holy Ghost.
[21]And she shall bring forth a son, and thou shalt call his name JESUS: for he shall save his people from their sins.
লুকলিখিত সুসমাচার। 1
30 দূত তাঁহাকে কহিলেন, মরিয়ম, ভয় করিও না, কেননা তুমি ঈশ্বরের নিকটে অনুগ্রহ পাইয়াছ।
31 আর দেখ, তুমি গর্ভবতী হইয়া পুত্র প্রসব করিবে, ও তাঁহার নাম যীশু রাখিবে।
Luke 1:30-31
[30]And the angel said unto her, Fear not, Mary: for thou hast found favour with God.
[31]And, behold, thou shalt conceive in thy womb, and bring forth a son, and shalt call his name JESUS.

বাংলায় যদিও আমরা ইয়েহশুয়াকে বহু আগে থেকে যীশু বলি এবং ইংরেজিতে জেসাস বলা হয়ে থাকে অধিকাংশ সময়ই, আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যীশুর মূল হিব্রু নাম 'ইয়েহশুয়া' যা ভাষাগত রূপান্তরের কারণে যীশু বা জেসাস হয়েছে।
আরবী যেহেতু হিব্রুর মতই একটি সেমেটিক ভাষা। হিব্রু, অরামীয় এবং আরবীকে সহোদরা ভাষা(Sister languages) বলে অভিহিত করা হয়, কারণ উচ্চারণ, লেখার ধরণ, বর্ণের সংখ্যা, উৎপত্তিস্থান এই সকল বিষয়ে এই ভাষাগুলোর মাঝে বেশ মিল আছে। তাই হিব্রুতে উচ্চারিত 'ইয়েহশুয়া' শব্দটি আরবীতে প্রায় একইরকমভাবেই উচ্চারিত হওয়ার কথা এবং মুহাম্মদের সময়ে বা তার আগের আরবী বাইবেলেও যীশুর নাম "ইয়াশু" ছিল(Jeffery, Arthur; Böwering, Gerhard; McAuliffe, Jane (2008). The Foreign Vocabulary of the Quran. Woods Press. p. 220. ISBN 978-1-4437-2149-3.) ।
আরব খ্রীষ্টিয়ানরা এখনও যীশুকে "ইয়াশু" নামেই সম্বোধন করে প্রায় হিব্রু উচ্চারণের কাছাকাছি করে। কিন্তু কুরআনে এই নাম "ঈসা" কোথা থেকে সংগৃহীত হয়েছে তা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারেননি, শুধু কিছু অনুমানের বিষয় এসেছে। অনেকে ব্যাখ্যা দেন"ঈসা" শব্দটি আরবীয় এমন তিনটি মূল শব্দের যেকোন একটি থেকে এসেছে যাদের অর্থ "অনুজ্জ্বল সাদা" থেকে অথবা "লালচে সাদা" অথবা "ঘোড়ার প্রস্রাব"। কিন্তু কেউ কেউ এসব তত্ত্ব নাকচ করে দিয়ে " ঈসা" শব্দটি হিব্রু অথবা সিরিয়াক থেকে এসেছে বলে ধারণা করেন(Jeffery, Arthur; Böwering, Gerhard; McAuliffe, Jane (2008). The Foreign Vocabulary of the Quran. Woods Press. p. 220. ISBN 978-1-4437-2149-3.)।
কিন্তু সিরিয়াক বা হিব্রুতে হুবহু এমন কোন শব্দ নাই যা যীশুকে নির্দেশ করে। আবার অনেক স্কলারের মতে মুহাম্মদ মুসার সাথে মিলিয়ে ছন্দ মেলানোর জন্য 'ইয়াশু'কে ইসা করেছেন। ফলে মুসা ও ইসা ছন্দ হিসাবে শ্রুতিমধুর হয়। কারণ কুরআনে এরকম অনেক নামকে ছন্দ মেলানো অবস্থায় পাওয়া যায়, যেমন হারুত ও মারুত, হারুন ও কারুন, ইয়াজুজ মাজুজ, জালুত ও তালুত ইত্যাদি(Jeffery, Arthur; The Foreign Vocabulary of the Quran. p. 219)। হাদিস সূত্রে পাওয়া যায় হাবিল ও কাবিল(বাইবেল মতে কয়িন) এর নাম। এই মিল করতে গিয়ে বাইবেলের চরিত্র শৌলকে তালুত করে ফেলা হয়েছে, সুতরাং একইভাবে 'ইয়াশু'কে 'ইসা' করে ফেলা খুবই সম্ভব। এই যুক্তির গ্রহণযোগ্যতা আছে এটা স্বীকার করতেই হবে।
প্রসঙ্গত বলা যায়, কুরআনে ব্যবহৃত আদম, ইব্রাহীম, ইস্মায়েল, ইসহাকসহ অনেক নামই আরবী নাম নয়, এগুলো সবই হিব্রু নাম কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে কুরআনে এসেছে (Jeffery, Arthur; The Foreign Vocabulary of the Quran. p. 219)এবং এই নামগুলোর হিব্রু অর্থ থাকলেও আরবী কোন অর্থ নাই৷ অনেক ক্ষেত্রেই সিরিয়াক ভাষা থেকে এই শব্দগুলো উদ্ভুত। তাহলে উপরের আলোচনায় আমরা বুঝলাম কুরআনে ব্যবহৃত যীশুর "ঈসা" নামের একদিকে যেমন কোন অর্থ নাই, তেমনি হিব্রু, অরামায়িক, সিরিয়াক বা তৎকালীন আরব খ্রীষ্টিয়ানদের উচ্চারিত শব্দের সাথেও এর কোন মিল খুজে পাওয়া যায় না। সুতরাং মুসলিম ভাইদের প্রতি জিজ্ঞাসা, যে কিতাব যীশুর নামই সঠিক উচ্চারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে তার বাণীর উপর নির্ভর করে যীশুর ব্যাপারে ধারণা আপনি কিভাবে নিতে পারেন?
>>>>> দানিয়েল স্টিফেন
0 coment rios: