লেখকঃ পাষ্টর জনসন সরকার
সমালোচকের দাবিঃ বাইবেলের পঞ্চম পুস্তক দ্বিতীয় বিবরণ ১৮/১৭-২০ বলছে:
‘‘তখন মাবুদ আমাকে বললেন, ‘ওরা
ভালই বলেছে। আমি ওদের জন্য ওদের ভাইদের মধ্য থেকে তোমার মত এক জন নবী (a
Prophet from among their brethren, like unto thee) উৎপন্ন করব। ও তার মুখে আমার কালাম দেব; আর আমি তাঁকে যা যা
হুকুম করব তা তিনি ওদেরকে বলবেন। আর আমার নামে তিনি আমার যে সব কালাম বলবেন,
আমার সেই কথা যদি কেউ না শোনে তবে আমি সেই লোককে দায়ী করব। কিন্তু আমি যে কালাম বলতে হুকুম করিনি, আমার নামে যে
কোন নবী দুঃসাহসপূর্বক তা বলে কিংবা অন্য দেবতাদের নামে যে কেউ কথা বলে সেই নবীকে
মরতে হবে। (মো.-১৩)
মুসলিম পণ্ডিতরা দাবি করেন যে, এখানে বনি-ইসরাইলের ভাতৃগণ বনি-ইসমাইল বা ইসমাইল বংশে মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে মূসা (আ)-এর মত একজন নবী হিসেবে প্রেরণের ভবিষ্যদ্বাণী করা
হয়েছে। ইহুদি-খ্রিষ্টান পণ্ডিতরা এ দাবি অস্বীকার করেন। কোনো কোনো ইহুদি পণ্ডিত
দাবি করেন যে, এ ভবিষ্যদ্বাণীতে মূসা (আ)-এর পরবর্তী নবী ইউসাকে
বোঝানো হয়েছে। আর খ্রিষ্টান পণ্ডিতরা দাবি করেন যে, এখানে
যীশু খ্রিষ্টকে বোঝানো হয়েছে। খ্রিষ্টীয় ধর্মবিশ্বাসে তিনি নিজেই ঈশ্বর ছিলেন,
ঈশ্বরের পুত্রও ছিলেন, ঈশ্বরের নবীও ছিলেন এবং
ঈশ্বরের মসীহও ছিলেন।
মুসলিম পণ্ডিতরা বাইবেলের বিভিন্ন বক্তব্য দ্বারা
ইহুদি ও খ্রিষ্টান পণ্ডিতদের দাবি খণ্ডনের চেষ্টা করেছেন। যোহন বা ইউহোন্না তাঁর
ইঞ্জিলের প্রথম অধ্যায়ে লেখেছেন: ‘‘আর ইয়াহিয়ার
সাক্ষ্য এই- যখন ইহুদীরা কয়েক জন ইমাম ও লেবীয়কে দিয়ে জেরুসালেম থেকে তাঁর কাছে এই
কথা জিজ্ঞাসা করে পাঠালো, ‘ধাপনি কে?’ তখন তিনি স্বীকার করলেন, অস্বীকার করলেন না, তিনি স্বীকার করে বললেন, ‘আমি সেই মসীহ নই।’ তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো,
তবে আপনি কে? আপনি কি ইলিয়াস? তিনি বললেন, আমি নই। আপনি কি সেই নবী? জবাবে তিনি বললেন, না। ... তারা তাঁকে জিজ্ঞসা করলো,
আপনি যদি সেই মসীহ্ নন, ইলিয়াসও নন, সেই নবীও নন, তবে বাপ্তিস্ম দিচ্ছেন কেন?’’ (ইউহোন্না ১/১৯-২৫, মো.-১৩)
এ বক্তব্য থেকে জানা যায় যে, ইহুদিরা বিশ্বাস করতেন যে, প্রতিশ্রুত নবীর আগমন
তখনো হয়নি এবং ‘সেই নবী’ ও ‘মসীহ’ দু’ ব্যক্তি হবেন,
এক ব্যক্তি নন। ইউহোন্না অন্যত্র লেখেছেন: ‘‘সে
সব কথা শুনে লোকদের মধ্যে কেউ কেউ বললো, ইনি সত্যিই সেই নবী। আর কেউ কেউ বলল, ইনি সেই মসীহ।’’ (ইউহোন্না
৭/৪০-৪১)। এ থেকেও জানা যায় যে, ‘মসীহ’ ও ‘সেই নবী’ পৃথক ব্যক্তি
হবেন।
মুসলিম পণ্ডিতরা আরো দাবি করেন যে, উপরের ভবিষ্যদ্বাণীর বক্তবও প্রমাণ করে যে, মুহাম্মাদই
(ﷺ) প্রতিশ্রুত নবী। কারণ তিনি
মূসার মত বা সদৃশ (like unto thee) ছিলেন। যেমন তাঁরা
উভয়ে আল্লাহর বান্দা ও রাসূল, পিতা-মাতার সন্তান, বিবাহিত ও সন্তান-সন্ততির পিতা, উভয়েই নতুন শরীয়ত
দিয়েছেন, উভয়ের শরীয়তেই রাষ্ট্র, সমাজ,
জিহাদ, যুদ্ধ, বিচার,
শাস্তি ইত্যাদি বিধান বিদ্যমান, উভয়েই
ত্রিত্ববাদ মুক্ত বিশুদ্ধ তাওহীদ বা একত্ববাদের শিক্ষা ও নির্দেশ দিয়েছেন, উভয়েই স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন, তাঁরা কেউ
অনুসারীদের জন্য শাপগ্রস্ত হননি ইত্যাদি। তাঁদের উভয়ের জীবন ও ধর্ম-ব্যবস্থা
(শরীয়ত) তুলনা করলে এরূপ আরো অনেক সাদৃশ্য ও মিল আমরা দেখতে পাই। এ সকল কোনো
বিষয়েই ঈসা মাসীহের সাথে মূসার (আ) কোনো মিল নেই। তিনি কোনোভাবেই মূসার সদৃশ ছিলেন
না। এছাড়া বাইবেল বলছে: ‘‘মূসার মত কোন নবী ইসরাইলের মধ্যে
আর উৎপন্ন হয়নি।’’ (দ্বিতীয় বিবরণ ৩৪/১০, মো.-১৩)
এ প্রসঙ্গে উইকিপিডিয়া ‘Muhammad
in the Bible’ প্রবন্ধে লেখেছে:
“Samau'al al-Maghribi, a Jewish mathematician who converted to
Islam, pointed to Deuteronomy 18:18 in his book Convincing the Jews as a
prophecy fulfilled by Muhammad. Samau'al argued in his book that since the
children of Esau are described in Deuteronomy 2:4-6 [and in Numbers 20:14 as
well] as the brethren of the children of Israel, the children of Ishmael can
also be described the same way.... Some Muslim writers... interpreted Qur'an
46:10 as a reference to Deuteronomy 18:18. The witness from among the Children
of Israel is thought to be Moses, and the one like him is believed to be
Muhammad. Qur'an 73:15 was also interpreted by some Muslim writers... as a
reference to Deuteronomy 18:18. Similarly, Qur'an 53:3-4, where it has been
stated that "Nor does he (Muhammad) speak of his own desire. It is but an
Inspiration that is inspired [unto him]", was further interpreted by Muslim
writers, as a reference to Deuteronomy 18:18. John 1:20-21 was also cited by
Muslims as a proof from the canonical gospels that Deuteronomy 18:18 is not a
prophecy of the Christ.”
‘‘ইহুদি গণিতবিদ সামাওয়াল মাগরিবী যিনি ইসলাম গ্রহণ
করেন, তার ‘ইহুদিদেরকে বোঝানো’ নামক পুস্তকে দ্বিতীয় বিবরণকে ১৮/১৮ মুহাম্মাদের (ﷺ) আগমনের মাধ্যমে পূর্ণতার ভবিষ্যদ্বাণী হিসাবে ইঙ্গিত করেছেন।
সামাওয়াল যুক্তি দিয়েছেন যে, দ্বিতীয় বিবরণ ২/৪-৬ (এবং গণনা
২০/১৪) শ্লোকে ইস-এর বংশধরদেরকে বনি-ইসরাইলের ‘ভ্রাতৃগণ’
বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এজন্য ইসমাইলের বংশধরগণও একইভাবে
বনি-ইসরাইলের ‘ভ্রাতৃগণ’ বলে আখ্যায়িত
হতে পারেন। ... কোনো কোনো মুসলিম লেখক কুরআনের ৪৬ সূরার (আহকাফ) ১০ আয়াতকে দ্বিতীয়
বিবরণ ১৮/১৮ উদ্ধৃতি বলে ব্যাখ্যা করেছেন। এ আয়াতে বনি-ইসরাইলের সাক্ষী বলতে মূসা
(আ) এবং ‘তাঁর মত একজনের’ বলতে
মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে বোঝানো হয়েছে। কুরআনের ৭৩
সূরার (মুযাম্মিল) ১৫ আয়াতকেও কোনো কোনো মুসলিম লেখক দ্বিতীয় বিবরণের এ বক্তব্যের
প্রতি ইঙ্গিত বলে গণ্য করেছেন। অনুরূপভাবে কুরআনের ৫৩ সূরা (নাজম) ৩-৪ আয়াত বলছে: ‘‘তিনি (মুহাম্মাদ) নিজের ইচ্ছা থেকে কথা বলেন না, তাঁর
কথা ওহী ভিন্ন কিছুই নয়, যা তাকে প্রত্যাদেশ করা হয়।’’
এ বক্তব্যকেও কোনো কোনো মুসলিম লেখক দ্বিতীয় বিবরণ ১৮/১৮-এর উল্লেখ
বলে গণ্য করেছেন। মুসলিমগণ স্বীকৃত ইঞ্জিল যোহন ১/২০-১২ উদ্ধৃত করে প্রমাণ করেন যে,
দ্বিতীয় বিবরণ ১৮/১৮ খ্রিষ্টের আগমন বিষয়ক ভবিষ্যদ্বাণী নয়।’’
জবাবঃ
অনেক মুসলিম প্রচারকেরা দাবি করেন হযরত মুহাম্মদ হলেন
মোশির মতন নবী, প্রভু যীশু খ্রীষ্ট মোশির মতন নবী নন তার জন্য তার অনেক মিথ্যাচার
করে থাকেন। আমি সমালোচকের সম্পূর্ন লেখাটি উল্লেখ করেছি যাতে করে প্রত্যেকে তার
মিথ্যাচার ধরতে পারে এবং সত্য জানতে পারে।
হযরত মুহাম্মদ কখনই দাবি করেন নাই যে “মোশি তার বিষয়ে
ভবিষ্যৎবানী করেছেন।” কুরআনেও কোথাও লেখা নাই “মোশি হযরত মুহাম্মদের বিষয়ে
ভবিষ্যৎবানী করেছেন।” হযরত মুহাম্মদকে ইহুদি খ্রীষ্টানদের নবী বানানোর জন্য মুসলিম
পন্ডিতেরা মূলত এই দাবি করেছেন।
“তোমার
ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার
মধ্য হইতে, তোমার ভ্রাতৃগণের মধ্য হইতে, তোমার জন্য আমার সদৃশ এক ভাববাদী উৎপন্ন করিবেন, তাঁহারই কথায় তোমরা কর্ণপাত করিবে।”
দ্বিতীয় বিবরন১৮:১৫; (কেরী)
“আমি উহাদের জন্য উহাদের
ভ্রাতৃগণের মধ্য হইতে তোমার সদৃশ এক ভাববাদী উৎপন্ন করিব, ও তাঁহার মুখে আমার বাক্য দিব; আর আমি তাঁহাকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিব, তাহা তিনি উহাদিগকে বলিবেন।”
দ্বিতীয় বিবরন১৮:১৮; (কেরী)
“আর আমার নামে তিনি আমার যে সকল বাক্য বলিবেন, তাহাতে যে কেহ কর্ণপাত না করিবে, তাহার কাছে আমি প্রতিশোধ লইব। কিন্তু আমি যে বাক্য বলিতে আজ্ঞা করি নাই, আমার নামে যে কোন ভাববাদী দুঃসাহসপূর্বক তাহা বলে, কিম্বা অন্য দেবতাদের নামে যে কেহ কথা বলে, সেই ভাববাদীকে মরিতে হইবে।”দ্বিতীয় বিবরন১৮:১৯-২০; (কেরী)
১।ইয়াওয়ে এলোহীম বলেছেন “তোমার
মধ্য হইতে” মোশি কোন জাতির লোক ছিলেন? নিঃসন্দেহে ইহুদি জাতি। ইয়াওয়ে
এলোহীম বলেছেন “তোমার মধ্য হতে” তার মানে ইহুদিদের মধ্য হতে এখানে আরবীদের মধ্যে
হতে নবী আসবে বলা হয় নি। তাই হযরত মুহাম্মদের সাথে এই ভবিষ্যৎবাণী প্রথমেই মিলে
না। অন্যদিকে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সাথে এই ভবিষ্যৎবাণী মিলে যায় কারন তিনি ইহুদি
জাতির লোক ছিলেন।
২। ইয়াওয়ে এলোহীম বলেছেন “তোমার
ভ্রাতৃগণের মধ্য হতে” হতে সেই নবী আসবে। মুসলিমরা কি কোন দিন ইহুদিদের
নিজের ভাই মনে করে? এই দাবি করা মানব ইতিহাসের সব চেয়ে হাস্যকর দাবি। কারন
মুসলিমরা প্রকাশ্য ইহুদিদের শত্রু। ভাই হওয়া তো দূরের কথা।
ভাই বলতে কি বোঝানো হয়েছেঃ দ্বিতীয় বিবরন১৭:১৫; পদে ইয়াওয়ে এলোহীম ইহুদিদের “ভাই” এর অর্থও বুঝিয়ে দিয়েছেন, “তখন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যাহাকে মনোনীত
করিবেন, তাহাকেই আপনার উপরে রাজা নিযুক্ত করিবে; তোমার ভ্রাতৃগণের মধ্য হইতে আপনার উপরে
রাজা নিযুক্ত করিবে; যে তোমার ভ্রাতা নয়, এমন বিজাতীয় ব্যক্তিকে আপনার
উপরে রাজা করিতে পারিবে না।”
এখানে ভাই বলতে শুধুমাত্র ইস্রায়েলীয় ভাইদের বোঝায়
কোন ভিনদেশি ভাইদের বুঝায় না। তাই এই নবী যে ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে থেকেই আসবে তা
শতভাগ নিশ্চিত। সমালোচক মহাদয় দাবি করেছেন,
“দ্বিতীয় বিবরণ ২/৪-৬ (এবং গণনা ২০/১৪) শ্লোকে ইস-এর বংশধরদেরকে বনি-ইসরাইলের ‘ভ্রাতৃগণ’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।” হাঁ এখানে ইসের বংশধরদেরকে
ইস্ররায়েলীয়দের ভাই বলা হয়েছে এতে কি প্রমানিত হয় যে হযরত মুহাম্মদ ইসের বংশধর
ছিলেন? উত্তরটা হচ্ছে “না”। হযরত মুহাম্মদকে ইশ্মায়েলের বংশধর হিসাবে মুসলিমরা মনে
করে। অব্রাহামের দুই ছেলে ইশ্মায়েলে এবং ইসহাক “ইসের” জন্মের পূর্বেই দুই জাতিতে
বিভক্ত হয়েছিল। এই খোড়া যুক্তিটা বেশি হাস্যকর মনে হওয়ার আরেকটি কারন “ইস” ইসহাকের
সন্তন ছিলেন ইশ্মায়েলের নয়। ইসহাকের সন্তনগন একে অপরকে ভাই বলতেই পারে সমস্যা
কোথাই? হযরত মুহাম্মদ ত আর ইসের বংশ থেকে আসেন নাই যে তিনি ইস্রায়েলীয়দের ভাই
হবেন! হযরত মুহাম্মদ কোন জাতি থেকে এসেছেন সেই বিষয়ে মুসলিমরাই নিশ্চিত নয়।ইসলামের
বিখ্যাত তাফসীরকারী ইবনে কাসির তার গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে হযরত মুহাম্মদ মোটেই
ইশ্মায়েলের বংশধর ছিলেন না। আদম থেকে শুরু করে হযরত মুহাম্মদ পর্যন্ত যারা বংশ
তালিকা করেছেন (যেমনঃ ইবনে ইসহাক/ইবনে হীশাম) তারা মিথ্যা বংশ তালিকা করেছেন।
তবে দেখুন হযরত মুহাম্মদকে ইহুদি-খ্রীষ্টানদের নবী
বানানোর জন্য মুসলিম লেখকেরা কতটা জালিয়াতি করেছেন। ইবনে কাসীরের লেখা থেকে স্পষ্ট
জানা যায় মুসলিমরা হযরত মুহাম্মদ থেকে মাত্র আদনান পর্যন্ত বংশতালিকা জানত। আদনানের আগে একজনের নামও তারা জানেন না আর যারা
এসব লিখেছেন তারা প্রকাশ্য মিথ্যাচার করেছেন জালিয়াতি করেছেন। হযরত মুহাম্মদ মোটেই
ইশ্মায়েলের বংশধরছিলেন না। কারন হাগার
আরবে বাস করতেন না তিনি মিসরের নারী ছিলেন তিনি ইশ্মায়েলকে নিয়ে মিসরে চলে
গিয়েছিলেন।
৩।“তাঁহার মুখে আমার বাক্য দিব; আর আমি তাঁহাকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিব,
তাহা তিনি উহাদিগকে বলিবেন।”
হযরত মুহাম্মদের মুখে ইয়াওয়ে এলোহীম
মোটেই তার বাক্য দেন নাই, কারন ইসলামে কথিত আছে হযরত মুহাম্মদ আল্লাহর সাথে কথা
বলতেন না বরং জিব্রাইল নামক এক ফেরেস্তার মাধ্যমে তিনি আল্লাহর বার্তা লাভ করতেন।
মোশীর মতন নবী হতে হলে হযরত মুহাম্মদকে আল্লাহর কাছ থেকে সরাসরি বার্তা লাভ করতে
হতো, যেহেতু তিনি মোশীর মতন নবী নন সেই জন্য তিনি আল্লাহর কাছ থেকে সরাসরি বার্তা
লাভ করতে পারেন নাই বরং এক দূতের দ্বারা বা র্তা লাভ করতেন বলে মুসলিমরা বিশ্বাস
করেন। অন্যদিকে প্রভু যীশু খ্রীষ্ট নিজেই ঈশ্বরের বাক্য হিসাবে সুপরিচিত তিনি যা
কিছু বলতেন তা তিনি নিজে থেকে বলতেন না পিতা ঈশ্বর তার মধ্যে থেকে কথা বলতেন এবং
প্রভু যীশু নিজে থেকে কিছু বলতেন না বরং পিতা ঈশ্বরের আদেশ মানুষের কাছে ঘোষণা
করতেনঃ
“আদিতে বাক্য
ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বরের সহিত
ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বর ছিলেন।”যোহন১:১;(কেরী)
“আর সেই বাক্য
মাংসে মূর্তিমান হইলেন, এবং আমাদের মধ্যে
প্রবাস করিলেন, আর আমরা তাঁহার মহিমা দেখিলাম, যেমন পিতা হইতে আগত একজাতের মহিমা; তিনি অনুগ্রহে ও সত্যে
পূর্ণ।” যোহন১:১৪;(কেরী)
“কেননা
আমি একা নহি, কিন্তু আমি আছি, এবং পিতা আছেন, যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন।”
যোহন৮:১৬;(কেরী)
“কারণ আমি আপনা হইতে বলি নাই; কিন্তু কি কহিব ও কি বলিব, তাহা আমার পিতা, যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন, তিনিই আমাকে আজ্ঞা করিয়াছেন।”যোহন৮:৪৯;(কেরী)
৪। “আর আমার
নামে তিনি আমার যে সকল বাক্য বলিবেন, তাহাতে যে কেহ কর্ণপাত না করিবে, তাহার কাছে আমি প্রতিশোধ
লইব।”
পবিত্র বাইবেলের ঈশ্বরের নাম “ইয়াওয়ে”(יהוה) যা বাংলা অনেক অনুবাদে যিহোবা
হিসাবেও অনুবাদ হয়েছে, এই পবিত্র নাম নবী মোশীর কাছে প্রকাশিত হয়েছিল,
“ঈশ্বর মোশিকে আরও কহিলেন,
তুমি ইস্রায়েল-সন্তানদিগকে এই কথা বলিও,
যিহোবা [সদাপ্রভু], তোমাদের
পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর তোমাদের নিকটে আমাকে
পাঠাইয়াছেন; আমার এই নাম অনন্তকালস্থায়ী, এবং এতদ্দ্বারা আমি পুরুষে পুরুষে স্মরণীয়।”(যাত্রাপুস্তক৩:১৫;)
এছাড়াও মোশির লেখা পবিত্র তৌরাহতে “ইয়াওয়ে”কে পিতা বলা হয়েছে,
“তোমরা
আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সন্তান; তোমরা মৃত লোকদের জন্য আপন আপন শরীর কাটকুট করিবে না, এবং ভ্রুরুর মধ্যস্থল ক্ষৌরি করিবে না।”দ্বিতীয়
বিবরন১৪:১; (কেরী)
“তোমরা
কি সদাপ্রভুকে এই প্রতিশোধ দিতেছ?
হে মূঢ় ও অজ্ঞান জাতি, তিনি কি তোমার পিতা নহেন,
যিনি তোমাকে লাভ
করিলেন।তিনিই তোমার নির্মাতা ও স্থিতিকর্তা।”
দ্বিতীয়
বিবরন৩২:৬; (কেরী)
প্রভু
যীশু খ্রীষ্ট “ইয়াওয়ে” নাম প্রচার করেছিলেন এবং তিনি যে সকলের “পিতা” তাও স্পষ্ট
ভাবে সকলকে জানিয়েছিলেন, “যীশু উত্তর করিলেন,
প্রথমটি এই, ‘‘হে ইস্রায়েল, শুন; আমাদের ঈশ্বর প্রভু একই প্রভু;” মার্ক১২:২৯;(কেরী)
প্রভু
যীশু খ্রীষ্ট এই বাক্যটি দ্বিতীয় বিবরন ৬:৪ উল্লেখ করেছিলেন
প্রভু
যীশু খ্রীষ্ট “ইয়াওয়ে” নাম প্রচার করেছিলেন,
“জগতের মধ্য হইতে তুমি আমাকে যে লোকদের দিয়াছ,
আমি তাহাদের কাছে তোমার নাম প্রকাশ করিয়াছি। তাহারা তোমারই
ছিল, এবং তাহাদের তুমি আমাকে দিয়াছ,
আর তাহারা তোমার বাক্য পালন করিয়াছে।” যোহন১৭:৬; (কেরী)
আর
আমি ইহাদিগকে তোমার নাম জানাইয়াছি, ও জানাইব;
যেন তুমি যে প্রেমে আমাকে প্রেম করিয়াছ, তাহা তাহাদের
মধ্যে থাকে, এবং আমি তাহাদের মধ্যে থাকি। যোহন১৭:২৬; (কেরী)
“আমি আপন পিতার নামে আসিয়াছি,
আর তোমরা আমাকে গ্রহণ কর না; অন্য কেহ যদি আপনার
নামে আইসে, তাহাকে তোমরা গ্রহণ করিবে।” যোহন৫:৪৩;(কেরী)
প্রভু
যীশু খ্রীষ্ট “ইয়াওয়ে” তার অনুসারিদের বলেছিলেন ইয়াওয়ে আমাদের “পিতা”,
“অতএব
তোমরা এই মত প্রার্থনা করিও;
হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র
বলিয়া মান্য হউক,” মথি৬:৯; (কেরী)
অন্যদিকে হযরত মুহাম্মদ “ইয়াওয়ে” নাম জানতেন না গোটা কুরআনে “ইয়াওয়ে” নাম নাই এমন কি
হাদিসেও নাই। মোশির
মতন নবী হতে হলে অবশ্যই “ইয়াওয়ে” নামটা জানা দরকার। হযরত
মুহাম্মদ স্পষ্ট আল্লাহকে “পিতা” মানতে স্পষ্ট অস্বীকার করেছেন তাই তিনি কোন ভাবেই
মোশীর মতন নবী হতে পারেন নাঃ
“আর বল,
‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি কোন
সন্তান গ্রহণ করেননি,
রাজত্বে তাঁর কোন শরীক নেই এবং অপমান থেকে বাঁচতে তাঁর কোন অভিভাবকের
দরকার নেই।’ সুতরাং তুমি
পূর্ণরূপে তাঁর বড়ত্ব ঘোষণা কর।”সূরা ১৭:১১১;(আল-বায়ান)
ইয়াহূদী
ও নাসারারা বলে, ‘আমরা আল্লাহর পুত্র ও তার প্রিয়জন’। বল, ‘তবে কেন তিনি তোমাদেরকে
তোমাদের পাপের কারণে আযাব দেন? বরং তোমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত মানুষ,
যাদেরকে তিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা আযাব দেন। আর আসমানসমূহ ও যমীন এবং তাদের মধ্যবর্তী যা আছে তার সার্বভৌমত্ব আল্লাহর
এবং তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তন’। সূরা৫:১৮;(আল-বায়ান)
কুরআনের ঈশ্বর
(আল্লাহ) নিজেই বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তিনি মোটেই পবিত্র
বাইবেলের নন, যদি তিনি পবিত্র বাইবেলের ঈশ্বর হতেন তবে জানতেন
কি কারনে এবং কেন ঈশ্বরকে পিতা বলা হয়েছে এবং কেন ঈশ্বরের প্রিয় লোকেদের তার পুত্র
বলা হয়েছে। আল্লাহর ৯৯টা নাম থাকলেও “পিতা” নাম টি সেখানে নেই।
“মোশির মতন নবী হতে হলে ঈশ্বরের পবিত্র নাম জানতে হবে, তাকে পিতা বলে
বিশ্বাস করতে হবে এবং সেই পবিত্র নাম প্রচার করতে হবে” কিন্তু হযরত মুহাম্মদ এর
কোন টাই করেন নি বরং এর বিপরীত শিক্ষা দিয়েছেন। তাই তিনি মোশির মতন নবী নন।
৫।“কিন্তু আমি যে বাক্য বলিতে
আজ্ঞা করি নাই, আমার নামে যে কোন ভাববাদী দুঃসাহসপূর্বক তাহা বলে,
কিম্বা অন্য দেবতাদের নামে যে কেহ কথা বলে, সেই ভাববাদীকে মরিতে হইবে।”
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট সব সময়ে পিতার আজ্ঞা পালন করেছেন
এমনি মৃত্যুর আগেও তিনি বলেছেন, “পরে তিনি কিঞ্চিৎ অগ্রে গিয়া
উবুড় হইয়া পড়িয়া প্রার্থনা করিয়া কহিলেন, হে আমার পিতঃ, যদি হইতে পারে, তবে এই পানপাত্র আমার নিকট হইতে দূরে
যাউক; তথাপি আমার ইচ্ছামত না হউক, তোমার ইচ্ছামত হউক।”মথি২৬:৩৯; (কেরী)
তাই প্রভু যীশু খ্রীষ্ট যে পিতা
ঈশরের আদেশ মতন কাজ করেছেন তা নিয়ে বিন্দু মাত্রও সন্দেহ নাই। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট
ইহুদিদের অন্য কোন দেবতা/ঈশ্বরের নামে প্রচার করেন নি তারা যাকে ঈশ্বর বলে বিশ্বাস
করত তার নামেই প্রচার করেছেন।
কিন্তু হযরত মুহাম্মদ এক সময়ে
শয়তানের বাক্য প্রচার করেছেন এবং ভিন্ন দেব-দেবীর নামে প্রচার করেছেন,
“তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও উযযা সম্বন্ধে? এবং
তৃতীয় আরেকটি ‘মানাত’ সম্বন্ধে?” সূরা৫৩:১৯-২০; (মুজিবুর
রহমান)
সহি বুখারি ৪৮৬২. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সূরাহ নাজমের মধ্যে সিজদা্ করলেন এবং তাঁর সঙ্গে মুসলিম, মুশরিক,
জিন ও মানব সবাই সিজদা্ করল। আইয়ুব (রহ.)-এর সূত্রে ইব্রাহীম ইবনু
তাহ্মান (রহ.) উপরোক্ত বর্ণনার অনুসরণ করেছেন;
তবে ইবনু উলাইয়াহ (রহ.) আইয়ূব
(রহ.)-এর সূত্রে ইবনু ‘আব্বাস
(রাঃ)-এর কথা উল্লেখ করেননি। [১০৭১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৪৯৫,
ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৪৯৮)[1]
সূনান আত তিরমিজী ৫৭৫। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে
বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা নাজম-এ সিজদা করেছেন। মুসলিম, মুশরিক, জ্বিন ও মানুষ সবাই তার সাথে সিজদা করেছেন। -সহীহ। বুখারী, কিসসাতুল গারানীক— (১৮, ২৫, ৩১ পৃঃ), বুখারী।
আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদে ইবনু মাসউদ ও আবু হুরাইরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। একদল বিদ্বানের মতে সূরা নাজম-এ সিজদা রয়েছে। একদল সাহাবা ও তাবিঈনের মতে মুফাসসাল সূরাসমূহে কোন সিজদা নেই। মালিক ইবনু আনাস এই মতের সমর্থক। কিন্তু প্রথম দলের মতই বেশি সহীহ। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ ও আহমাদ প্রথম মতের সমর্থক। (অর্থাৎ মুফাসসাল সূরায় সিজদা আছে)[2]।
তাফসীরে জালালাইন খন্ড ৪, পৃঃ৩৯২-৩৯৩
ইবনে কাসীর খন্ড৪, পৃঃ৪৮৪;
ইসলামের শীর্ষ স্কলারদের মতে
হযরত মুহাম্মদ শয়তানের দ্বারা বিভ্রন্ত হয়ে শয়তানের “বাক্য” প্রচার করেছেন তাই
তিনি মোটেই মোশির মতন নবী হতে পারে না। কারন মোশি কখনই শয়তানের বাক্য প্রচার করেন
নি।
বিষয়টি
পানির মতন পরিস্কার যে হযরত মুহাম্মদ শয়তানের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে শয়তানের কালাম
প্রচার করে আল্লাহর কালাম বিকৃত করেছেন। তাই হযরত মুহাম্মদ নিজেই নিজেই সাক্ষ্য
দিয়েছেনঃ
ভবিষ্যৎবানীর প্রতিটি কথা বিশ্লেষন
করে দেখা যায় মোশীর মতন নবী হলেন প্রভু যীশু খ্রীষ্ট হযরত মুহাম্মদ নন।
মোশীর
সাথে কি হযরত মুহাম্মদের সাদৃশ্য রয়েছে?
এই ভবিষ্যদ্বানীটি যে হযরত মুহাম্মদ-এর তা প্রমাণ করার জন্য নায়েক ও দিদাত হযরত মুহাম্মদ ও হযরত মোশীর
মধ্যেকার বিভিন্ন সাদৃশ্যের একটি তালিকা প্রণয়ন করেছেন : মোশী
১. হযরত
মুহাম্মদ এবং মূসা দুজনেই একটি শরীয়ত প্রণয়ন করেছেন, তবে ঈসা তা করেননি।
২. হযরত
মুহাম্মদ এবং মূসা দুজনেরই জন্ম জাগতিক পিতার মাধ্যমে হয়েছিল; কিন্তু ঈসার কোন জাগতিক পিতা ছিলেন না।
৩. হযরত
মুহাম্মদ এবং মূসা দুজনেই বিবাহিত ছিলেন; ঈসা বিবাহ
করেননি।
৪. হযরত
মুহাম্মদ ও মূসা দুজনই তাদের নিজ গোষ্ঠীর মধ্যে রাজনৈতিক নেতা ছিলেন; ঈসা তা ছিলেন না।
৫. দুই নবীই
আল্লাহর নির্দেশে তাদের সময় থেকে মাস গণনা আরম্ভ করেছিলেন।
৬. হযরত
মুহাম্মদ ও হযরত মূসা দুজনেই তাদের জীবনকালে শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে পালিয়ে
বেড়িয়েছেন এবং দুজনেই তাদের শ্বশুড়দের কাছে আশ্রয় পেয়েছিলেন।
৭. মুহাম্মদ
ও মূসা দুজনেরই স্বভাবিক মৃত্যু ঘটেছে।
অন্যান্য তর্কবিদরাও আরও কিছু সাদৃশ্য
দেখিয়েছেন যেগুলো আসলে ভুল প্রমাণিত হয়েছে:
– হযরত মুহাম্মদ ও মূসা দুজনেই একটি নির্দিষ্ট জায়গা তাদের
শাসনাধীনে এনেছিলেন (ভুল: মূসা কেনান দেশে ঢুকবার ঠিক আগেই মারা গিয়েছিলেন এবং পরে হযরত
ইউসা তা জয় করেন)- হযরত মুহাম্মদ ও মূসা দুজনেই মিদিয়ান নামক একটি জায়গায়
আশ্রয় নিয়েছিলেন। মিদিয়ান পরে ইয়াথরিব এবং তার পরে মদিনা নামে পরিচিতি লাভ
করে। (ভুল: মিদিয়ান মদিনা থেকে ৪০০ মাইল দূরে অবস্থিত)- হযরত মুহাম্মদ ও মূসা দুজনেই মদিনায়/মিদিয়ানে ১০ বছর তবলীগ করেছেন (ভুল: মিদিয়ানের মরু এলাকায় মূসা ৪০ বছর ধরে শুধু ভেড়াদের রাখাল
হিসেবে কাজ করেছেন- আল্লাহ তাকে পরে তবলীগ কাজে ডেকেছিলেন)
তাহলে আমরা দেখি যে মুহাম্মদ ও মোশীর
মধ্যে সাতটি সাদৃশ্য তুলে ধরা যায়। লক্ষ করুন কীভাবে এই সাদৃশ্যগুলো (সাধারন জন্ম, বিবাহ ও মৃত্যু, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, নিয়ম
প্রণয়ণ এবং রাজ্য দখল) প্রায় যেকোনো নেতার দ্বারাই পূর্ণ করা সম্ভব।
আমরা ঠিক একইভাবে খুব সহজেই দায়ূদ
নবী ও মোশীর নবীর মধ্যেও ৯টি সাধারণ সাদৃশ্য বের করতে পারি:
তেমনইভাবে হযরত সোলমন ও মোশীর
মধ্যে এই ধরণের অগভীর ৮টি সাদৃশ্য দেখা যায়:
এমনকী সাবেক বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক
সরকারের প্রধান ডঃ ফখরুদ্দীন আহমেদ এরও মোশী নবীর সাথে-স্বাভাবিক জন্ম, বিবাহিত, সন্তানদের পিতা, তাদের
নিজেদের গোষ্ঠির নেতার মতো ইত্যাদি অনেক মিল খুঁজে পাওয়া সম্ভব। এইভাবে দেখা যায়
যে, এই ধরণের সাধারণ “সাদৃশ্য” দ্বারা আসলে কিছুই প্রমান হবার নয়।
“মোশীর মত” সেই নবীকে চিনে নিতে হলে এইসব অগভীর
সাদৃশ্যের পরিবর্তে মোশি নবীর মূল কাজ এবং তার অনন্য বৈশিষ্ট্য দেখতে হবে। আমরা
যদি মোশি নবীর সমস্ত ঘটনা তৌরাহ কিতাব থেকে পড়ি, তাহলে
আমরা দেখতে পাই যে মোশি নবীর কিছু অদ্বিতীয় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কেবল যীশু খ্রীষ্টের জীবনেই পরিপূর্ণতা পেয়েছে— দায়ূদ, সোলোমন অথবা মুহাম্মদের জীবনে নয়।
মুসলিম প্রচারকেরা যেসব সাদৃশ্য
দেখিয়েছেন তা ইস্রায়েলের যে কোন নবীর পূর্ন করা সম্ভব। এসব মোটেই সাদৃশ্যের মধ্যেই
পড়ে না। মোশীর মতন নবী হতে হলে কিছু বিশেষ সাদৃশ্য দেখতে হবে যা প্রভু যীশু
খ্রীষ্ট বাদে আর কার মধ্যে পাওয়া সম্ভব না।
মোশির এবং
যীশু খ্রীষ্টের অতি গুরুত্বপূর্ন সাদৃশ্য সমূহঃ
১। মোশিকে পবিত্র বাইবেলে এলোহীম [אֱלֹהִים] বলা হয়েছেঃ
“তখন সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, দেখ,
আমি ফরৌণের কাছে তোমাকে ঈশ্বরস্বরূপ
করিয়া নিযুক্ত করিলাম, আর তোমার ভ্রাতা হারোণ তোমার ভাববাদী হইবে।” যাত্রাপুস্তক
৭:১; (কেরী)
প্রভু যীশু খ্রীষ্টকেও এলোহীম [אֱלֹהִים]
বলা হয়েছে, গ্রীক বাইবেলে এলোহীম [אֱלֹהִים] এর সমর্থক হলো থেওস [Θεὸς (Theos)]
যোহন লিখিত সুসমাচারের প্রথমেই প্রভু
যীশু খ্রীষ্টকে থেওস [Θεὸς (Theos)] বলা হয়েছেঃ
“আদিতে বাক্য ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বরের সহিত ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বর ছিলেন।” যোহন ১:১;(কেরী)
হযরত মুহাম্মদকে কখনই এলোহীম [אֱלֹהִים] অথবা থেওস [Θεὸς (Theos)] বলা হয়
নি তাই তিনি মোশির মতন নবী নন।
২। মোশি ইয়াওয়ের এলোহীমের সাথে সরাসরি কথা বলতেনঃ
তিনি বললেন, “তোমরা আমার
কথা শোনো; তোমাদের মধ্যে যদি কেউ ভাববাদী
হয়, তবে আমি সদাপ্রভু তার কাছে
কোন দর্শনের মাধ্যমে নিজের পরিচয় দেব, স্বপ্নে তার সঙ্গে কথা
বলব। আমার দাস
মোশি সেরকম নয়, সে আমার সমস্ত গৃহের মধ্যে
বিশ্বস্ত। তার সঙ্গে
আমি মুখোমুখি হয়ে কথা বলি, দর্শন কিংবা রহস্যের মাধ্যমে নয়, সে আমার আকার দেখে। অতএব
আমার দাসের বিরুদ্ধে, মোশির বিরুদ্ধে, কথা বলতে তোমরা কেন ভয় পেলে না?”গনণাপুস্তক ১২:৬-৮; IRVBEN
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ইয়াওয়ের এলোহীমের সাথে সরাসরি কথা বলতেনঃ
পিতঃ, তোমার নাম মহিমান্বিত
কর। তখন স্বর্গ হইতে এই বাণী হইল, ‘আমি তাহা মহিমান্বিত করিয়াছি,
আবার মহিমান্বিত করিব। যোহন ১২:২৮;(কেরী)
ইসলামের বিশ্বাস অনুসারে হযরত মুহাম্মদ আল্লাহর সাথে সরাসরি কথা বলার অধিকার রাখতেন না বরং জিব্রাইল নামক কোন এক ফেরেস্তার দ্বারা বানী প্রাপ্ত হতেন তাও বেশির ভাগ স্বপ্ন দর্শের মাধ্যমে আর অন্যান্য সময়ে ফেরেস্ত এসে তাকে বলে যেতেন (যদিও সেই ফেরেস্তাকে হযরত মুহাম্মদ ছাড়া আর কেউ দেখতে পেতে না)
সহি
বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ২
আবদুল্লাহ
ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হারিস ইবনু হিশাম (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনার প্রতি ওহী কিভাবে আসে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কোন সময় তা ঘন্টাধ্বনির ন্যায় আমার নিকট আসে। আর এটি-ই আমার উপর সবচাইতে কষ্টদায়ক হয় এবং তা সমাপ্ত হতেই ফিরিশতা যা বলেন আমি তা মুখস্থ করে নিই, আবার কখনো ফিরিশতা মানুষের আকৃতিতে আমার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি যা বলেন আমি তা মুখস্থ করে ফেলি। আয়িশা (রাঃ)
বলেন, আমি প্রচন্ড শীতের দিনে ওহী নাযিলরত অবস্থায়
তাঁকে দেখেছি। ওহী শেষ হলেই তাঁর কপাল থেকে ঘাম ঝরে পড়ত।
সহি বুখারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন
নাম্বারঃ ৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৪
৩। ইয়াহ্ইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি
সর্বপ্রথম যে ওহী আসে, তা ছিল ঘুমের মধ্যে সত্য স্বপ্নরূপে। যে স্বপ্নই তিনি দেখতেন তা একেবারে ভোরের আলোর ন্যায় প্রকাশ
পেত। তারপর তাঁর কাছে নির্জনতা প্রিয় হয়ে পড়ে এবং তিনি হেরা’র গুহায় নির্জনে থাকতেন। আপন পরিবারের কাছে ফিরে আসা এবং কিছু
খাদ্যসামগ্রী সঙ্গে নিয়ে যাওয়া এইভাবে সেখানে তিনি একাধারে বেশ কয়েক রাত ইবাদতে
নিমগ্ন থাকতেন।[3]
তাই হযরত মুহাম্মদ মোটেই মোশির মতন নবী নন।
৩। মোশির সাথে
আরেক নবীর অবির্ভাবঃ
মোশি সাথে ইয়াওয়ে আরেক জন নবীকে তার সহযোগী হিসাবে পাঠিয়ে ছিলেন “তখন সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, দেখ,
আমি ফরৌণের কাছে তোমাকে ঈশ্বরস্বরূপ
করিয়া নিযুক্ত করিলাম, আর তোমার
ভ্রাতা হারোণ তোমার ভাববাদী হইবে।” যাত্রাপুস্তক ৭:১; (কেরী)
প্রভু
যীশু খ্রীষ্টের পথ প্রস্তত করার জন্যও নবী যোহনকে পাঠানো হয়েছিল, “যোহন উত্তর
করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, আমি
জলে বাপ্তাইজ করিতেছি; তোমাদের মধ্যে একজন দাঁড়াইয়া আছেন, যাঁহাকে তোমরা জান না, যিনি আমার পশ্চাৎ আসিতেছেন; আমি তাঁহার পাদুকার বন্ধন খুলিবারও যোগ্য নহি। যর্দনের অন্য পারে, বৈথনিয়াতে, যেখানে
যোহন বাপ্তাইজ করিতেছিলেন, সেখানে
এই সকল ঘটিল।পরদিন তিনি যীশুকে আপনার নিকটে আসিতে
দেখিলেন, আর কহিলেন, ঐ দেখ,
ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার
লইয়া যান। উনি সেই ব্যক্তি, যাহার বিষয়ে আমি
বলিয়াছিলাম, আমার পশ্চাৎ এমন এক
ব্যক্তি আসিতেছেন, যিনি আমার অগ্রগণ্য
হইলেন, কেননা তিনি আমার পূর্বে
ছিলেন।” যোহন১:২৬-৩০; (কেরী)
অন্যদিকে হযরত মুহাম্মদের সময়ে অন্য কোন নবী ছিলেন না তাই তিনি
মোশির মতন নবী নন।
৪। মোশী ইয়াওয়ে এলোহীমের দ্বারা
৭০জনকে ইস্রায়েলীয়দের বেছে নিয়েছিলেনঃ
“তখন সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, তুমি যাহাদিগকে লোকদের প্রাচীন ও অধ্যক্ষ বলিয়া জান, ইস্রায়েলের এমন সত্তর জন প্রাচীন লোককে আমার কাছে সংগ্রহ
কর; তাহাদিগকে সমাগম-তাম্বুর নিকটে আন;
তাহারা তোমার সহিত সেই স্থানে দাঁড়াইবে।”গণনাপুস্তক১১:১৬;
(কেরী)
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তার প্রচার কর্যে ৭০ জনকে বেছে
নিয়েছিলেনঃ
“পরে সেই সত্তর জন আনন্দে ফিরিয়া আসিয়া কহিল, প্রভু, আপনার নামে ভূতগণও আমাদের বশীভূত হয়।” লূক১০:১৭; (কেরী)
৫। মোশির সময়ে লোকেরা পবিত্র আত্মা পেয়েছিলেন এবং
ভাববানি বলেছিলেনঃ
“আর সদাপ্রভু মেঘে নামিয়া তাঁহার
সহিত কথা কহিলেন, এবং যে আত্মা তাঁহার উপরে ছিলেন, তাঁহার কিয়দংশ লইয়া সেই সত্তর জন প্রাচীনের উপরে অধিষ্ঠান করাইলেন; তাহাতে আত্মা তাঁহাদের উপরে অধিষ্ঠান করিলে তাঁহারা ভাবোক্তি প্রচার করিলেন, কিন্তু তৎপশ্চাৎ আর করিলেন না।”গণনাপুস্তক১১:২৫; (কেরী)
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তার শিষ্যদের পবিত্র আত্মা দিয়ে
গেছেন যার দ্বারা তারা ভাববানি করেছিলেনঃ
“আর দেখ,
আমার পিতা যাহা প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, তাহা আমি তোমাদের
নিকটে প্রেরণ করিতেছি; কিন্তু যে পর্যন্ত ঊর্ধ্ব হইতে শক্তি পরিহিত না হও, সেই পর্যন্ত তোমরা এই নগরে অবস্থিতি কর।” লূক২৪:৪৯;(কেরী)
“কিন্তু পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে আসিলে তোমরা শক্তি প্রাপ্ত হইবে;
আর তোমরা যিরূশালেমে, সমুদয় যিহূদিয়া ও শমরিয়া
দেশে, এবং পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত আমার সাক্ষী হইবে।” প্রেরিত১:৮; (কেরী)
“পরে পঞ্চাশত্তমীর দিন উপস্থিত হইলে তাঁহারা সকলে এক স্থানে
সমবেত ছিলেন। আর হঠাৎ আকাশ
হইতে প্রচণ্ড বায়ুর বেগের শব্দবৎ একটা শব্দ আসিল,
এবং যে গৃহে তাঁহারা বসিয়াছিলেন, সেই গৃহের সর্বত্র
ব্যাপ্ত হইল। আর অংশ অংশ হইয়া পড়িতেছে,
এমন অনেক অগ্নিবৎ জিহ্বা তাঁহাদের দৃষ্টিগোচর হইল;
এবং তাঁহাদের প্রত্যেক জনের উপরে বসিল। তাহাতে
তাঁহারা সকলে পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হইলেন, এবং আত্মা তাঁহাদিগকে যেরূপ বক্তৃতা দান করিলেন, তদনুসারে অন্য অন্য ভাষায় কথা কহিতে লাগিলেন।” প্রেরিত২:১-৪; (কেরী)
অন্যদিকে হযরত মুহাম্মদ “পবিত্র আত্মার” সম্পর্কে জানতেন
না তিনি জিব্রাইল ফেরেস্তাকে পাক-রুহ[পবিত্র আত্মা] মনে করতেন যা পবিত্র বাইবেলে
অনুসারে কোন ভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। তাই
হযরত মুহাম্মদ মোশির মতন নবী নন।
৬। মোশি এবং প্রভু যীশু খ্রীষ্ট একে অপরের
সাথে দেখা করেছেন,
“ছয় দিন পরে যীশু পিতর,
যাকোব ও তাঁহার ভ্রাতা যোহনকে সঙ্গে করিয়া বিরলে এক উচ্চ পর্বতে লইয়া
গেলেন। পরে তিনি তাঁহাদের
সাক্ষাতে রূপান্তরিত হইলেন; তাঁহার মুখ সূর্যের ন্যায় দেদীপ্যমান,
এবং তাঁহার বস্ত্র দীপ্তির ন্যায় শুভ্র হইল। আর দেখ, মোশি ও এলিয় তাঁহাদিগকে দেখা দিলেন, তাঁহারা তাঁহার সহিত কথোপকথন করিতে লাগিলেন।” মথি১৭:১-৩;(কেরী) প্রভু যীশু খ্রীষ্ট যে মোশির মতন
নবী তার প্রমান দিতে মোশী এবং এলিয় এসেছিলেন স্বর্গ হতে।
দ্বিতীয়
বিরবণ ১৮:১৫; পদে ইয়াওয়ে এলোহীম
ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন, “তাঁহারই
কথায় তোমরা কর্ণপাত করিবে।”
(তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু
তোমার মধ্য হইতে, তোমার ভ্রাতৃগণের মধ্য হইতে, তোমার জন্য আমার সদৃশ এক ভাববাদী উৎপন্ন করিবেন, তাঁহারই কথায়
তোমরা কর্ণপাত করিবে।)
যখন মোশি
এসে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সাথে দেখা করেন, তখন প্রভু যীশু তিনজন গুরুত্বপূর্ন
শিষ্যেদের সামনে ইয়াওয়ে এলোহীম স্পষ্ট বলেন “তোমরা পুত্রের কথা শোন”:
“তিনি কথা কহিতেছেন, এমন সময়ে দেখ, একখানি উজ্জ্বল মেঘ তাঁহাদিগকে ছায়া
করিল, আর দেখ, সেই মেঘ হইতে এই বাণী হইল,‘ইনিই আমার
প্রিয় পুত্র, ইহাঁতেই আমি প্রীত, ইহাঁর কথা শুন’।”মথি১৭:৫; (কেরী)
এই ঘটনার দ্বারা স্পষ্ট ভাবে প্রমানিত হয় যে প্রভু যীশু খ্রীষ্টই “মোশির মতন নবী”।
সহিবুখারি
৩৪৩৮. ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি ‘ঈসা
(আঃ), মূসা (আঃ) ও ইব্রাহীম (আঃ)-কে দেখেছি। ‘ঈসা (আঃ) গৌর বর্ণ, কোঁকড়ানো চুল এবং
প্রশস্ত বুকবিশিষ্ট লোক ছিলেন, মূসা (আঃ)
বাদামী রঙের ছিলেন, তাঁর দেহ ছিল সুঠাম এবং মাথার
চুল ছিল সোজা যেন ‘যুত’ গোত্রের একজন মানুষ। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১৯৩)[4]
লক্ষনিয়
বিষয়টি হলো অব্রাহাম ,মোশী এবং যীশু খ্রীষ্টকে একি সাথে তিনি দেখেছেন অর্থাৎ প্রভু
যীশু খ্রীষ্ট যে মোশির মতন নবী এর দ্বারাও তা প্রমানিত হয়। কারন অব্রাহামের
দ্বারা জগতে আশীর্বাদ এসছিল, মোশীর দ্বারা
নিয়ম এসছিল, আর পরিত্রাণ এসেছিল প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা। হযরত মুহাম্মদ দাবি করেছেন তাদের তিন জনকে একি
সাথে দেখেছেন কারন অব্রাহামের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করা হয়েছিল তার পূর্নতা প্রভু
যীশু খ্রীষ্টের সময়ে পূর্ন হয়েছিল।
যদিও হযরত
মুহাম্মদের মেরাজে বেহেস্তে নবীদের দেখার বর্ণনা ইহুদিদের গ্রন্থ Legends
of the Jews থেকে
চুরি করে লেখা হয়েছে, “The third division is built of silver and gold.
Here dwell Abraham, Isaac, and Jacob, and all the Israelites who came out of
Egypt, and the whole generation that lived in the desert. Also David is there,
together with all his sons except Absalom, one of them, Chileab, still alive.
And all the kings of Judah are there, with the exception of Manasseh, the son
of Hezekiah, who presides in the second division, over the penitents. Moses and
Aaron preside over the third division.”[5]
অনেকে বলেন যেহেতু দ্বিতীয় বিবরণের শেষে (৩৪:১০-১২) বলা হয়েছে যে মূসার মত আর কোন নবী ইসরাইলদের মধ্যে থেকে আসবে না সেহেতু সেই
নবীকে অবশ্যই ইসরাইল বংশের বাইরের হতে হবে।
“মোশির তুল্য কোন ভাববাদী
ইস্রায়েলের মধ্যে আর উৎপন্ন হয় নাই; সদাপ্রভু তাঁহার সঙ্গে সম্মুখাসম্মুখি
হইয়া আলাপ করিতেন; বস্তুতঃ সদাপ্রভু তাঁহাকে পাঠাইলে তিনি মিসর
দেশে, ফরৌণের, তাঁহার সমস্ত দাসের ও তাঁহার
সমস্ত দেশের প্রতি সর্বপ্রকার চিহ্ন ও অদ্ভুত লক্ষণ প্রদর্শন করিলেন, এবং সমস্ত ইস্রায়েলের দৃষ্টিতে মোশি পরাক্রান্ত হস্তের ও ভয়ঙ্করতার কত না কর্ম
করিয়াছিলেন।”দ্বিতীয়
বিবরণের ৩৪:১০-১২; (কেরী)
দাবিটি সম্পূর্ন মিথ্যাঃ আসলে, এখানে শুধুমাত্র বলছে যে তৌরাহ কিতাবের সময়ের শেষ পর্যন্ত (“আজ পর্যন্ত”), অর্থাৎ ১৪০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের আগে,
মোশীর মত আর কোন নবী আসেনি। যদি অনির্দিষ্ট ভবিষ্যতের কথা এখানে
বোঝানো হত তাহলে “আজ পর্যন্ত” কথাটি
থাকত না, বরং শুধু লেখা থাকত “ইসরাইলদের
মধ্যে মোশীর মত আর কোন নবীর জন্ম নিবে না।”
দ্বিতীয় বিবরণের ৩৪:১০-১২; এখানে
২টি শর্ত দেওয়া হয়েছেঃ
১। ইয়াওয়ে এলোহীমের সাথে সরাসরি কথা বলা ক্ষমতা
২। আশ্চর্য কাজ করার ক্ষমতা
এই দুটি ক্ষমতা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মধ্যে ছিলঃ
ইয়াওয়ে
এলোহীমের সাথে সরাসরি কথা বলা ক্ষমতাঃ পিতঃ, তোমার নাম মহিমান্বিত কর।
তখন স্বর্গ হইতে এই বাণী হইল,
‘আমি তাহা মহিমান্বিত করিয়াছি,
আবার মহিমান্বিত করিব। যোহন ১২:২৮;(কেরী)
আশ্চর্য
কাজ করার ক্ষমতাঃ “যীশু আরও অনেক কর্ম করিয়াছিলেন; সেই সকল যদি এক এক করিয়া লেখা যায়, তবে আমার বোধ হয়, লিখিতে লিখিতে এত গ্রন্থ হইয়া উঠিত যে, জগতেও তাহা ধরিত না।” যোহন২১:২৫;
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট অনেক আশ্চর্য কাজ করেছেন সব কিছু
সুসমাচারে লেখা হয় নি গুরুত্বপূর্ন ঘটনাগুলোকে উল্লেখ করা হয়ছে। ঠিক যেমন মোশির
ক্ষেত্রেও ঘটেছিলঃ “বস্তুতঃ সদাপ্রভু তাঁহাকে পাঠাইলে তিনি মিসর দেশে, ফরৌণের, তাঁহার সমস্ত দাসের ও তাঁহার সমস্ত দেশের প্রতি
সর্বপ্রকার চিহ্ন
ও অদ্ভুত লক্ষণ প্রদর্শন করিলেন, এবং সমস্ত ইস্রায়েলের দৃষ্টিতে মোশি পরাক্রান্ত হস্তের ও ভয়ঙ্করতার কত না কর্ম করিয়াছিলেন।”
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ইহুদিদের
বুঝিয়েছিলেন আমাকে বিশ্বাস করছ না কিন্তু আমি যে সব আশ্চর্য কাজ করেছি সেগুলো ত
বিশ্বাস করো! কারন মোশির মতন নবী হতে হলে অবশ্যই অনেক আশ্চর্য কাজ করতে হবে।
“আমাকে বিশ্বাস না করিলেও, সেই কার্যে বিশ্বাস
কর;” যোহন ১০:৩৮;(কেরী)
অন্যদিকে কুরআন অনুসারে হযরত মুহাম্মদ আল্লাহর সাথে সরাসরি
কথা বলার ক্ষমতা ছিল না।
তিনি ফেরেস্তার মাধ্যমে বানী প্রাপ্ত হতেন বলে মুসলিমরা
বিশ্বাস করে।
হযরত মুহাম্মদের মোশির মতন আশ্চর্য কাজ করার ক্ষমতা ছিল
নাঃ
আর তারা বলে,
‘কেন তার উপর তার রবের পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন
নাযিল করা হয়নি’? বল, ‘নিশ্চয় আল্লাহ
যে কোন নিদর্শন নাযিল করতে সক্ষম। কিন্তু তাদের অধিকাংশ জানে না’। সূরা৬:৩৭; (আল-বায়ান)
“আর তারা বলে, ‘তাঁর রবের পক্ষ থেকে তার উপর কোন নিদর্শন কেন নাযিল করা হয় না’?
বল, ‘গায়েবের জ্ঞান তো কেবল আল্লাহরই। অতএব তোমরা অপেক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রয়েছি’। সূরা১০:২০; (আল-বায়ান)
অতঃপর
যখন আমার নিকট থেকে তাদের কাছে সত্য আসল তখন তারা বলল, ‘মূসাকে যা
দেয়া হয়েছিল তাকে(মুহাম্মাদকে) কেন সেরূপ দেয়া হল না’? ইতঃপূর্বে
মূসাকে যা দেয়া হয়েছিল তারা কি তা অস্বীকার করেনি? তারা বলেছিল,
‘দু’টিই যাদু, একটি অপরটিকে
সাহায্য করে’। আর তারা বলেছিল, ‘আমরা সবই অস্বীকারকারী’। সূরা ২৮:৪৮; (আল-বায়ান)
হযরত মুহাম্মদ নিজেই বলেছেন ওহী ছাড়া তার কাছে আর কোন
মুজিযা ছিল নাঃ
সহি
বুখারি ৪৯৮১. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু
’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক নবীকে
তাঁর যুগের প্রয়োজন মুতাবিক কিছু মুজিযা দান করা হয়েছে, যা দেখে লোকেরা তাঁর প্রতি ঈমান এনেছে। আমাকে যে মুজিযা দেয়া হয়েছে তা হচ্ছে,
ওয়াহী- যা আল্লাহ্ আমার প্রতি অবতীর্ণ করেছেন। কাজেই আমি আশা করি, কিয়ামতের দিন
তাদের অনুসারীদের অনুপাতে আমার অনুসারীদের সংখ্যা অনেক অধিক হবে। [৭২৭৪;
মুসলিম ১/৭০, হাঃ ১৫২,
আহমাদ ৮৪৯৯] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬১৬)[6]
অর্থাৎ মোশি যেমন আশ্চর্য কাজ করেছেন তার বিন্দুমাত্রও
হযরত মুহাম্মদ করেন নি তাই তিনি মোশির মতন নবী নন। এখন যদি কেউ দাবি
করে হযরত মুহাম্মদ আশ্চর্য কাজ করেছেন তা হবে হযরত মুহাম্মদের নিজের কথার সাথেই
বৈপরীত্য। তাই দ্বিতীয় বিবরণের ৩৪:১০-১২; এর দুটি শর্ত প্রভু যীশু
খ্রীষ্ট পূর্ন করেছেন, হযরত মুহাম্মদ নন।
মোশির এবং
যীশু খ্রীষ্টের অতি সাধারন সাদৃশ্য সমূহঃ
১। মোশি ও যীশু খ্রীষ্ট দুজনেই ইসরাইল-বংশোভুত ছিলেন, কিন্তু মুহাম্মদ ইসরাইলের লোক ছিলেন না।
২। মোশি ও যীশু খ্রীষ্ট দুজনেরই জন্ম গরীব অপ্রভাবশালী পরিবারে হয়েছিল, কিন্তু হযরত মুহাম্মদ জন্ম মক্কার একটি প্রভাবশালী পরিবারে হয়েছে।
৩। মোশি ও যীশু খ্রীষ্ট দু’জনেরই
প্রতিপালন করেছে তাদের আপন মা, কিন্তু হযরত মুহাম্মদকে প্রতিপালন
করেছে তার বেদুইন ধাত্রী হালিমাহ্।
৪। জন্মের পরপরই মোশি ও যীশু
খ্রীষ্টকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল নিজ দেশের শাসনকর্তার হুকুমে।
৫। জন্মের পরপরই মোশি ও যীশু খ্রীষ্ট
দুজনকেই ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা হয়েছিল।
৬। মোশি ও যীশু খ্রীষ্ট উভয় শিক্ষিত
ছিলেনঃ
“আর মোশি মিসরীয়দের সমস্ত বিদ্যায় শিক্ষিত
হইলেন, এবং তিনি বাক্যে ও কার্যে পরাক্রমী ছিলেন।”প্রেরিত৭:২২; (কেরী)
“তিন দিনের পর তাঁহারা তাঁহাকে ধর্মধামে পাইলেন; তিনি গুরুদের মধ্যে বসিয়া তাঁহাদের কথা শুনিতেছিলেন ও তাঁহাদিগকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিতেছিলেন; আর যাহারা তাঁহার কথা শুনিতেছিল,
তাহারা সকলে তাঁহার বুদ্ধি ও উত্তরে অতিশয় আশ্চর্য জ্ঞান করিল।” লূক২:৪৬-৪৭; (কেরী)
“পরে যীশু জ্ঞানে ও বয়সে এবং ঈশ্বরের ও মনুষ্যের নিকটে অনুগ্রহে বৃদ্ধি পাইতে থাকিলেন।” লূক২:৫২; (কেরী)
কিন্তু হযরত মুহাম্মদের অক্ষরজ্ঞান ছিল না, ইবন আব্বাস বলেন, أمّي ‘উম্মী’ শব্দের অর্থ হল নিরক্ষর। যে লেখা-পড়া কোনটাই জানে না। [বাগভী] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
নিজেও বলেছেন, “আমরা নিরক্ষর জাতি। লিখা জানি না, হিসাব জানি না।” [বুখারী:
১০৮০][7]
৭। মোশি ও যীশু খ্রীষ্ট দুজনই মিসর থেকে ফিলিস্তিন যাত্রা করেন।
৮। মোশি ও যীশু খ্রীষ্ট ইয়াওয়ে
এলোহীমের সাথে “সামনা-সামনি” একটা পাহাড়ের উপরে কথা বলেন (যাত্রাপুস্তক
৩৩:১১, মথি ১৭:৩),যার পরে তাদের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠে (যাত্রাপুস্তক ৩৪:২৯, মথি ১৭:২)।
৯। মোশি ও যীশু খ্রীষ্ট দুজনেই পানির উপরে তাদের অলৌকিক ক্ষমতা
প্রদর্শন করেছেন; মোশি লোহিত সাগরকে দুভাগ করেছেন এবং যীশু খ্রীষ্ট গালীল সাগরে ঝড় থামিয়েছিলেন।
১০। মোশি ও যীশু খ্রীষ্ট দুজনই তাদের প্রচার শুরু করার আগে একটি
নির্জন মরু এলাকায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন; মোশি
চল্লিশ বছর ধরে (যাত্রাপুস্তক ৭:৭) এবং যীশু খ্রীষ্ট চল্লিশ
দিন ধরে (প্রেরিত ৭:২৩, মথি ৪:১)।
১১। মোশি ও যীশু খ্রীষ্ট দুজনই মরুভূমিতে পরীক্ষীত হয়েছিলেন
(দ্বিতীয় বিবরন৮:২; মার্ক১:১৩)
১২। মোশি এবং যীশু খ্রীষ্ট দুজনই
স্বর্গ থেকে খাবার এনে তাদের অনুসারিদের খাইয়েছিলেন।
১৩। মোশি তার সময়ে মধ্যস্থ ছিলেন এবং
পরে যীশু খ্রীষ্ট এসে মধ্যস্থ হয়েছেন (যাত্রাপুস্তক২০:১৯; ১তীমথিয়২:৫)
১৪। মোশি ও যীশু খ্রীষ্ট দুই জনেই
তাদের মৃত্যুর বিষয়ে আগে থেকে জানতেন।
১৫।মোশি ও যীশু খ্রীষ্ট দুই জনেই
ইয়াওয় এলোহীমের ইচ্ছা অনুসারে মৃত্যু বরন করেছেন।
হযরত মুহাম্মদ নিজেই বলেছেন তিনি নবী মোশী থেকে বড় ননঃ
সহি বুখারি ৩৪০৮ আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একজন মুসলিম আর
একজন ইয়াহূদী পরস্পরকে গালি দিল। মুসলিম ব্যক্তি
বললেন, সেই সত্তার কসম! যিনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তামাম জগতের উপর মনোনীত করেছেন। কসম করার সময় তিনি একথাটি বলেছেন। তখন
ইয়াহূদী লোকটিও বলল, ঐ সত্তার কসম! যিনি মূসা (‘আঃ) –কে তামাম জগতের উপর মনোনীত করেছেন। তখন সেই
মুসলিম সাহাবী সে সময় তার হাত উঠিয়ে ইয়াহূদীকে একটি চড় মারলেন। তখন সে ইয়াহূদী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট গেল এবং ঘটনাটি জানালো যা তার ও মুসলিম সাহাবীর
মধ্যে ঘটেছিল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা আমাকে মূসা
(‘আঃ)–এর উপর বেশি মর্যাদা দিওনা। সকল মানুষ বেহুশ হয়ে যাবে। আর আমিই সর্বপ্রথম হুশ ফিরে
পাব। তখনই আমি মূসা (‘আঃ) –কে দেখব, তিনি
আরশের একপাশ ধরে রয়েছেন। আমি জানি না, যারা বেহুঁশ হয়েছিল, তিনিও কি তাদের অন্তর্ভুক্ত অতঃপর আমার আগে তাঁর হুশ এসে গেছে? কিংবা তিনি তাদেরই একজন, যাঁদেরকে আল্লাহ্ বেহুঁশ হওয়া থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন।[8]
হযরত
মুহাম্মদ স্পষ্ট বলেছেন, কোন মুসলিম যেন এটা মনে না যে হযরত মুহাম্মদ মোশির চেয়ে শ্রেষ্ট। হযরত মুহাম্মদের হুশ ফিরে আসার
আগেই মোশি নবী বেহেস্তে আল্লাহর সাথে অবস্থান করবেন এবং তিনি আল্লাহর আরশ ধরে দাঁড়িয়ে
থাকবেন। মুহাম্মদ যদি মোশির মতন নবী
হতেন তবে তিনি তার সাথেই আরশ ধরে দাঁড়িয়ে থাকতেন মর্যাদার দিক থেকে এই হাদিস
অনুসারে মোশির হযরত মুহাম্মদের থেকে অনেক বেশি।
আর এখান
থেকে আরেকটি বিষয় উঠে আসে মোশি আল্লাহর সাথে কিয়ামতের দিনের শুরুতে থাকবেন কিন্তু হযরত মুহাম্মদ
সাধারন মানুষদের সাথে মৃত থেকে জীবিত হবেন এবং দেখবেন যে মোশি আল্লাহর আরশ ধরে দাড়িয়ে আছেন। অর্থাৎ মোশির
সাথে হযরত মুহাম্মদের আকাশ পাতালের পার্থক্য রয়েছে।
হযরত মুহাম্মদ নিজেই বলেছেন তিনি যোনা নবী থেকে বড় ননঃ
সহিহ বুখারী ৩৩৯৫; ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
কোন ব্যক্তির এ কথা বলা
ঠিক হবে না যে, আমি (নবী) ইউনুস ইব্নু মাত্তার চেয়ে উত্তম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথা বলতে গিয়ে ইউনুস (‘আঃ)-এর পিতার নাম উল্লেখ করেছেন।[9]
যোনা ছিলেন Minor Prophet তিনি মোশির
সমতূল্য ছিলেন না আর হযরত মুহাম্মদ বলছেন তিনি যোনা নবী থেকে ছোট তবে তিনি কিভাবে মোশির
মতন হতে পারেন?
যোহন ১:১৯-২৩ পদের উল্লেখিত নবী কি হযরত মুহাম্মদ?
“সেই নবী” বলতে কি পবিত্র বাইবেলে কি
বোঝানো হয়েছে?
মুসলিমরা দাবি করে যোহন ১:২০-২১; অনুসারে ইহুদিরা
তাদের উপর অঙ্গিকারকৃত মসিয়াহ (যীশু) এবং নবী (মুহাম্মদ) দুজনই ভিন্ন ব্যক্তি হবে।
এবং এই কারনেই তারা যোহনকে জিজ্ঞাস করে, "সে(যোহন) কে? এবং যোহন নির্দ্ধিধায় স্বীকার
করে, "আমি মসীহ নই।" তারা যোহনকে আবার জিজ্ঞেস করে, "তুমি কে তাহলে?
তুমিই কি এলিয়াহ? যোহন উত্তর দেয়, "আমি নই।" তারা জিজ্ঞেস করে,"তাহলে
তুমিই কি নবী? সে উত্তর দেয় না।" এ থেকে প্রমানিত হয় হয় যে এখানে হযরত মুহাম্মদের
বিষয়ে ভবিষ্যৎবানী করা হয়েছে।
পবিত্র বাইবেল অনুসারে “সেই নবী/The Prophet” বলতে মোটেই মোশির মতন নবীর কথা বলা
হয়নি। কারন “সেই নবী” উপাধিটি অনেক নবীদের ক্ষেত্রে পবিত্র বাইবেল ব্যবহৃত হয়েছেঃ
যিশাইয়
নবীর ক্ষেত্রেঃ
মিখা নবীর
ক্ষেত্রেঃ
হোশেয়
নবীর ক্ষেত্রেঃ
যিরমিয়
নবীর ক্ষেত্রেঃ
যোনা নবীর
ক্ষেত্রেঃ
এমন কি
প্রভু যীশু খ্রীষ্টকেও সেই নবী বলা হয়েছে,
“তাহাতে লোকসমূহ
কহিল, উনি সেই ভাববাদী, গালীলের নাসরতীয় যীশু।” মথি২১:১১;
“সেই নবী/ The Prophet” দ্বারা মোটেই
আলাদা কোন নবীকে বোঝায় না বরং “সেই নবী” শব্দের দ্বারা অনেক জনকেই বোঝানো হয়েছে বা
অনেককে বোঝানো হয়ে গেছে। ইহুদিরা “সেই নবী” বলতে যে কোন একটি নবীকে বুঝত এছাড়া আর
কিছু না। তার প্রমান পবিত্র শাস্ত্রেই রয়েছেঃ “পরে যীশু
কৈসরিয়া-ফিলিপীর অঞ্চলে গিয়া আপন শিষ্যদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, মনুষ্যপুত্র কে,
এই বিষয়ে লোকে কি বলে? তাঁহারা কহিলেন,
কেহ কেহ বলে, আপনি যোহন বাপ্তাইজক; কেহ কেহ বলে, আপনি এলিয়; আর কেহ
কেহ বলে, আপনি যিরমিয়
কিম্বা ভাববাদিগণের কোন একজন। তিনি তাঁহাদিগকে
বলিলেন, কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?
শিমোন পিতর উত্তর করিয়া কহিলেন, আপনি সেই খ্রীষ্ট, জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র।”মথি১৬:১৩-১৬; (কেরী)
তারা “সেই নবী” বলতে যেকোন নবীকে বুঝত
[“ভাববাদিগণের কোন একজন।”] সেই সময়ের লোকরা মসীহ সম্পর্কে অনেক ভূল ধারনা পোষন করত কেউ
দাবি করেছে, “যোহন বাপ্তাইজক” (যদিও সেই সময়ে যোহন বাপ্তাইজক ছিলেন) কেউ দাবি
করেছেন, “নবী এলিয়” কেউ দাবি করেছেন, “যিরমিয়” আবার কেউ দাবি করেছেন , “নবীদের
মধ্যে একজন” তাহলে তারা কি যিরমিয়ের অপেক্ষা করছিল? নাকি তারা যোহন বাপ্তাইজকের
অপেক্ষা করছিল? মোটেই না।
সেই সময়ের ইহুদি লোকেরা মূলত মসীহের
অপেক্ষা করছিলঃ “আর লোকেরা যখন অপেক্ষায় ছিল, এবং যোহনের বিষয়ে সকলে মনে মনে এই তর্ক বিতর্ক
করিতেছিল, কি জানি, ইনিই বা সেই
খ্রীষ্ট, তখন যোহন উত্তর করিয়া সকলকে
কহিলেন, আমি তোমাদিগকে জলে বাপ্তাইজ করিতেছি বটে, কিন্তু এমন একজন আসিতেছেন, যিনি আমা অপেক্ষা শক্তিমান,
যাঁহার পাদুকার বন্ধন খুলিবার যোগ্য আমি নই; তিনি
তোমাদিগকে পবিত্র আত্মা ও অগ্নিতে বাপ্তাইজ করিবেন।” লূক৩:১৫-১৬;
পবিত্র
শাস্ত্র অনুসারে এটা পরিস্কার যে ইহুদিরা কোন সাধারন কোন নবীর অপেক্ষা করছিলেন না,
বরং তারা মসীহের অপেক্ষা করছিল (লূক ৩:১৫-১৬;)।
মসীহ
হওয়ার জন্য ৩ টি গুনাবলীর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে প্রথমত, তিনি রাজা হবেন(১শমূয়েল ১৫:১;)
দ্বিতীয়ত তিনি যাজক হবেন (যাত্রাপুস্তক ২৮:৪১;) এবং তৃতীয়ত তিনি নবী
হবেন(১রাজাবলী ১৯:১৬;।)
প্রভু যীশু ছিলেন সেই নবী (যোহন ৬:১৪; প্রেরিত ৭:৪০;), তিনি ছিলেন
মহা যাজক (ইব্রীয় ৪:১৪; ৭:২২-২৮;), তিনি রাজা
(লূক ১:৩০-৩৩; প্রকাশিত বাক্য ১৯:১৬;)
তাই
শুধুমাত্র নবী, যাজক, রাজা হলেই কেউ মসীহ হতে পারে না এই তিনিটি গুনাবলীর সম্বনয়ে
মসীহ হওয়ার চিহ্ন এর মধ্যে একটি গুণাবলী না থাকলে মসীহ হওয়া অসম্ভব। আর প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মধ্যে সবই ছিল কারন তিনি মসীহ।
মোশির মতন নবীর বিষয়ে পবিত্র শাস্ত্র কি বলে?
পবিত্র শাস্ত্রে মহান নবী মোশির সাথে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের
সাদৃশ্য করা হয়েছেঃ
“কারণ ব্যবস্থা মোশি দ্বারা দত্ত হইয়াছিল, অনুগ্রহ ও সত্য
যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা উপস্থিত হইয়াছে।” যোহন১:১৭; (কেরী)
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট মহান নবী মোশির
সাথে সাদৃশ্য করেছেনঃ
“আর মোশি যেমন প্রান্তরে
সেই সর্পকে উচ্চে উঠাইয়াছিলেন, সেইরূপে মনুষ্যপুত্রকেও
উচ্চীকৃত হইতে হইবে,” যোহন৩:১৪;
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট নিজেই বলেছেন
তিনিই দ্বিতীয় বিবরন ১৮ অধ্যায়ের ভবিষ্যৎবানীকৃত নবীঃ
“পরে তিনি মোশি
হইতে ও সমুদয়
ভাববাদী হইতে আরম্ভ করিয়া সমুদয় শাস্ত্রে তাঁহার নিজের বিষয়ে যে সকল কথা আছে, তাহা
তাঁহাদিগকে বুঝাইয়া দিলেন।” লূক২৪:২৭;
(কেরী)
“পরে তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমাদের সঙ্গে থাকিতে থাকিতে
আমি তোমাদিগকে যাহা বলিয়াছিলাম, আমার সেই বাক্য এই, মোশির ব্যবস্থায় ও ভাববাদিগণের গ্রন্থে এবং গীতসংহিতায়
আমার বিষয়ে যাহা যাহা লিখিত আছে, সেই সকল অবশ্য পূর্ণ হইবে।”লূক২৪:৪৪; (কেরী)
“তোমরা শাস্ত্র অনুসন্ধান করিয়া থাক, কারণ তোমরা মনে করিয়া
থাক যে, তাহাতেই তোমাদের অনন্ত জীবন রহিয়াছে; আর তাহাই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়;”
যোহন৫:৩৯; (কেরী)
“কারণ যদি তোমরা মোশিকে বিশ্বাস করিতে, তবে আমাকেও বিশ্বাস করিতে, কেননা আমারই বিষয়ে তিনি লিখিয়াছেন।”যোহন৫:৪৬; (কেরী)
শিষ্যরাও নিশ্চিত ছিলেন যে প্রভু যীশু
খ্রীষ্টই দ্বিতীয় বিবরন ১৮ অধ্যায়ের ভবিষ্যৎবানীকৃত নবীঃ
“ফিলিপ নথনেলের
দেখা পাইলেন, আর তাঁহাকে কহিলেন, মোশি ব্যবস্থায় ও ভাববাদিগণ যাঁহার কথা লিখিয়াছেন, আমরা তাঁহার
দেখা পাইয়াছি; তিনি নাসরতীয় যীশু, যোষেফের পুত্র।” যোহন১:৪৫; (কেরী)
পিতর স্পষ্ট ভাবে বলেছেন প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ততদিন স্বর্গে
থাকবেন যত দিন পর্যন্ত নিরপিত সময় উপস্থিত না হয় অর্থাৎ নবীরা মসীহের জীবনি সম্পর্কে
সম্পূর্ন ভবিষ্যৎবানী করবেন তারপরে মসীহ আসবেন। প্রভু তার নিরপিত সময়ে আসলেন মোশির
সহ অন্যান্য নবীদের ভবিষ্যৎবানী পূর্ন করলেনঃ
যাঁহাকে স্বর্গ নিশ্চয়ই গ্রহণ করিয়া রাখিবে, যে পর্যন্ত
না সমস্ত বিষয়ের পুনঃস্থাপনের কাল উপস্থিত হয়, যে কালের বিষয় ঈশ্বর নিজ পবিত্র ভাববাদিগণের
মুখ দ্বারা বলিয়াছেন, যাঁহারা পূরাকাল হইতে হইয়া গিয়াছেন। মোশি ত বলিয়াছিলেন, ‘‘প্রভু ঈশ্বর তোমাদের
জন্য তোমাদের ভ্রাতৃগণের মধ্যে হইতে আমার সদৃশ এক ভাববাদীকে উৎপন্ন করিবেন, তিনি তোমাদিগকে
যাহা যাহা বলিবেন, সেই সমস্ত বিষয়ে তোমরা তাঁহার কথা শুনিবে; প্রেরিত৩:২১-২২;
খ্রীষ্টের প্রথম শহীদ স্থিফান ইহুদিদের সামনে ঘোষনা
করেছেন, প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ছিলনে মোশির মতন নবী যাকে তারা না চিনতে পেরে হত্যা
করিয়েছেঃ
“ইনি সেই মোশি, যিনি ইস্রায়েল-সন্তানগণকে এই কথা বলিয়াছিলেন,
‘‘ঈশ্বর তোমাদের
জন্য তোমাদের ভ্রাতৃগণের মধ্য হইতে আমার সদৃশ একজন ভাববাদীকে উৎপন্ন করিবেন।”
প্রেরিত ৭:৩৭; (কেরী)
“তোমাদের পিতৃপুরুষেরা কোন্ ভাববাদীকে
তাড়না না করিয়াছে? তাহারা তাঁহাদিগকেই বধ করিয়াছিল, যাঁহারা পূর্বে সেই ধর্মময়ের আগমন
জ্ঞাপন করিতেন, যাঁহাকে
সমপ্রতি তোমরা শত্রুহস্তে সমর্পণ ও বধ করিয়াছ;” প্রেরিত
৭:৫২; (কেরী)
পবিত্র শাস্ত্র অনুসারে প্রভু যীশু
খ্রীষ্ট হচ্ছেন মোশির মতন নবী হযরত মুহাম্মদ নন। সমালোচক যদিও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে
সত্যকে অস্বীকার করার চেষ্টা করেছেন,
কিন্তু সত্যের সামনে মিথ্যা টিকতে পারে না।
0 coment rios: