সদাপ্রভুর
ব্যবস্থা সিদ্ধ, প্রাণের স্বাস্থ্যজনক; সদাপ্রভুর সাক্ষ্য বিশ্বসনীয়, অল্পবুদ্ধির জ্ঞানদায়ক।–
গীতসংহিতা১৯:৪;
লেখকঃ
পাষ্টর জনসন সরকার
মৌমাছিঃ
শ্রমিক মৌমাছি এরা সবচেয়ে ক্ষুদ্রাকৃতির। এদের চোখ ছোট, কিন্তু হুল আছে। রাণী ও পুরুষ
বাদে অবশিষ্ট সকল সদস্যই শ্রমিক মৌমাছি হলো নারী । এরা নানা দলে ভাগ হয়ে চাকের যাবতীয়
কাজ (যথা চাক নির্মাণ করা, ফুলের মিষ্টি রস ও পরাগরেণু সংগ্রহ করা, মধু তৈরী করা ,
চাকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা, চাকে বাতাস দেওয়া চাক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ইত্যাদি
) সম্পন্ন করে। এদের জন্ম নিষিক্ত ডিম থেকে। এদের আয়ু প্রায় একমাস। মৌমাছির চাকে
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে স্ত্রী মৌমাছি। আর পুরুষ মৌমাছি বা 'ড্রোন' বংশবিস্তার
করা ছাড়া কোন কাজই করে না।এমনকি নিজেদের খাবারের জন্য তারা স্ত্রীদের ওপর নির্ভর করে।
কেননা পুরুষ মৌমাছির হুল বা মধু আহরণের অঙ্গ নেই।
এ থেকে আমরা বুঝতে পারি, মধুসগ্রহ থেকে যাবতীয় কাজ নারী মৌমাছিরা করে, পুরুষ
মৌমাছি শুধুমাত্র বংশবৃদ্ধির কাজে ব্যবহৃত হয় আর অন্য কোন কাজে নয়। পবিত্র বাইবেলেও
আজ থেকে হাজার হাজার বছর পূর্বে খ্রীষ্টপূর্ব
(১০১০-৯৭০) স্ত্রী মৌমাছি এবং মধুর চাক নিয়ে কথা বলেছে , যেখানে শিমশোন নারী মৌমাছি এবং তাদের দ্বারা গঠিত মধুর চাক দেখতে পান।
“কিছুকাল পরে তিনি তাহাকে বিবাহ করিতে সেই স্থানে ফিরিয়া গেলেন, এবং সেই সিংহের শব দেখিবার জন্য পথ ছাড়িয়া গেলেন; আর দেখ, সিংহের দেহে এক ঝাঁক মধুমক্ষিকা ও মধুর চাক রহিয়াছে।”বিচারকর্তিগণ ১৪:৮;
এখানে মৌমাছির জন্য যে হিব্রু শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে তা হলো (דְּבוֹרִ֛ים (də·ḇō·w·rîm))
এবং আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে এটি নারী বাচক বহু বচনের শব্দ (feminine
plural)। পবিত্র বাইবেল যখন নারী মৌমাছি এবং তাদের তৈরী মধুরচাক
নিয়ে কথা বলছে সেই যুগে কেউ এটা জানত না যে নারী মৌমাছিরাই মধুসংগ্রহ করে এবং মধুরচাক
বানায়। এই কথা বিজ্ঞান অনেক পরে জানতে পেরেছে কিন্তু পবিত্র বাইবেল আজ থেকে প্রায় ৩
হাজার বছর পূর্বে এই তথ্য মানবজাতিকে জানিয়েছে।
পিপিলীকাঃ
পিঁপড়ারা হলসামাজিক পোকামাকড়, এবংউপনিবেশ হল একটি পারিবারিক সম্প্রদায় যার প্রতিটি পিঁপড়া একটি অবিচ্ছেদ্য একক। সম্প্রদায় ব্যতীত, কোনও একটি ব্যক্তি সঠিকভাবে কাজ করতে বা বেঁচে থাকতে পারে না এবং লার্ভা সম্পূর্ণরূপে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্রমাগত যত্নের উপর নির্ভরশীল। সাধারণত তিনটিএকটি উপনিবেশের মধ্যে জাতি , বা শ্রেণী:রাণী, পুরুষ, এবংকর্মী । পুরুষ পিঁপড়ারা তাদের দৈনন্দিন বাসার কাজে কোন
ভূমিকা পালন করে না। তারা কেবল অল্প সময়ের জন্য বেঁচে থাকে, সীমিত সংখ্যায় দেখা যায়
এবং উপনিবেশের ভার্চুয়াল পরজীবী, যাদের তাদের খাওয়াতে হয়। উর্বর স্ত্রী, রাণী, কেবল
একটি কাজ করে: ডিম পাড়া। পিঁপড়ার
জীবনচক্রের চারটি পর্যায় রয়েছে - ডিম, লার্ভা, পিউপা এবং প্রাপ্তবয়স্ক - এবং কর্মী পিঁপড়ার জন্য সাধারণত ৮ থেকে ১০
সপ্তাহ সময়কাল বিস্তৃত হয়।
এ থেকে আমরা বুঝতে পারি, নারী পিঁপড়া কেবল কঠর পরিশ্রম
করে পুরুষ পিঁপড়া সন্তান জন্ম দেওয়ার কাজ ছাড়া আর কোন কাজ করে না। এই বিষয়টি বিজ্ঞানিরা
অনেক বছর রিসার্চ করে বিষয়টি বুঝতে পেরেছে। যদিও পবিত্র বাইবেল হাজার হাজার বছর পূর্বেই
নারী পিঁপড়ার পরিশ্রম থেকে অলস ব্যক্তিদের শিক্ষা গ্রহণ করতে বলেছে,
“হে অলস, তুমি পিপীলিকার
কাছে যাও, তাহার ক্রিয়া সকল দেখিয়া জ্ঞানবান হও।” হিতপদেশ৬:৬;
English
Standard Version
Go to the ant, O
sluggard; consider her ways, and be wise.
এখানে পিঁপড়ার জন্য যে হিব্রু শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে তা হলো נְמָלָ֥ה (nə·mā·lāh) এবং এটি নারীবাচক শব্দ (feminine singular) পবিত্র বাইবেলের ‘উপদেশক’ পুস্তকটি খ্রীষ্টপূর্ব ৬৯৭ বছর পূর্বের অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ২৫০০ বছর পূর্বে পবিত্র বাইবেল আমাদের এই তথ্যটি জানিয়েছে যে নারী পিঁপড়া মূলত পরিশ্রম করে কাজ করে পুরুষ পিঁপড়া নয় এবং নারী পিঁপড়া থেকেই অলস ব্যক্তিদের শিক্ষা গ্রহণ করতে বলেছে।
এছাড়াও বর্তমান বিজ্ঞান আমাদের জানায় পিঁপড়াদের মধ্যে
রানী, পুরুষ এবং নারী কর্মী থাকা সত্বেও তাদের
পরিচালনা করার মতন কোন শ্রেনী নেই, “পিঁপড়াদের এই উপনিবেশকে কখনো কখনো সুপার-অর্গানিজম বা দলগতস্বত্তাও বলা হয়, কারণ এরা সবাই মিলে কেবল একটি প্রাণীর মত আচরণ করে এবং অস্তিত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ ভাবে সংগ্রাম করে।”[1]
এই তথ্যটি বিজ্ঞানিরা অনেক রিসার্চ করে পেয়েছেন কিন্তু পবিত্র বাইবেল প্রায় ২৫০০ বছর পূর্বেই আমাদের স্পষ্ট রূপে জানিয়েছে, “ তাহার
বিচারকর্তা কেহ নাই, শাসনকর্তা কি অধ্যক্ষ কেহ নাই, তবু সে গ্রীষমকালে তাহার খাদ্য
জমা করে,শস্য কাটিবার সময়ে ভক্ষ্য সঞ্চয় করে।”- হিতপদেশ৬:৭-৮;
হাল্লেলূইয়া।
[1]
Oster GF, Wilson EO (১৯৭৮)। Caste and ecology in the social insects। Princeton University Press, Princeton। পৃষ্ঠা 21–22। আইএসবিএন 0-691-02361-1।
0 coment rios: