লেখকঃ পাষ্টর জনসন সরকার।
"কারণ যোনা যেমন তিন দিবারাত্র বৃহৎ মৎস্যের উদরে ছিলেন,
তেমনি মনুষ্যপুত্রও তিন দিবারাত্র পৃথিবীর গর্ভে থাকিবেন।"[1]
"এবং কোড়া প্রহার করিয়া তাঁহাকে বধ করিবে;
পরে তৃতীয় দিবসে তিনি পুনরায় উঠিবেন।"[2]
পবিত্র বাইবেল অনুসারে
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট রবিবারে মৃত থেকে জীবিত হয়ে উঠেছিলেন।
“বিশ্রামদিন অবসান হইলে, সপ্তাহের প্রথম দিনের ঊষারম্ভে, মগ্দলীনী মরিয়ম ও অন্য মরিয়ম কবর দেখিতে আসিলেন।”[3] তবে যীশু খ্রীষ্ট কেন যোনা নবীর চিহ্নের বিষয়ে উল্লেখ করেছিলেন?
এই কালের দুষ্ট ও
ব্যভিচারী লোকেরা চিহ্নের অন্বেষণ করে, কিন্তু যোনার চিহ্ন ব্যতিরেকে আর কোন চিহ্ন তাহাদিগকে দেওয়া যাইবে না।[4]
এর জবাব প্রভু যীশু খ্রীষ্ট নিজেই দিয়েছেন সেই অধ্যায়েই যে তিনি তৃতীয় দিবসে জীবিত হয়ে উঠবেনঃ
সেই সময় অবধি যীশু আপন শিষ্যদিগকে স্পষ্টই
বলিতে লাগিলেন যে, তাঁহাকে যিরূশালেমে যাইতে হইবে, এবং প্রাচীনবর্গের, প্রধান যাজকদের
ও অধ্যাপকদের হইতে অনেক দুঃখ ভোগ করিতে হইবে, ও হত হইতে হইবে, আর তৃতীয় দিবসে উঠিতে
হইবে।[5]
এখন কি সৈনরাও তার কথাটি মনে রেখেছিল যে "তিনি তৃতীয় দিবসে জীবিত হয়ে উঠবেন":
মহাশয়, আমাদের মনে পড়িতেছে, সেই প্রবঞ্চক জীবিত থাকিতে বলিয়াছিল, তিন দিনের পরে আমি উঠিব। অতএব তৃতীয় দিবস পর্যন্ত তাহার কবর চৌকি দিতে আজ্ঞা করুন; পাছে তাহার শিষ্যেরা আসিয়া তাহাকে চুরি করিয়া লইয়া যায়, আর লোকদিগকে বলে, তিনি মৃতগণের মধ্য হইতে জীবিত হইয়া উঠিয়াছেন; তাহা হইলে প্রথম ভ্রান্তি অপেক্ষা শেষ ভ্রান্তি আরও মন্দ হইবে।[6]
তিনি দিন বলতে কি বোঝায়?
ইহুদি দিন গণনার নিয়ম অনুসারে সকালের কিছু ভাগ সময় এবং রাতের কিছু ভাগ
সময়কে এক দিন হিসাবে গণনা করা হয়।
পবিত্র শাস্ত্র হতে ১ম উদাহরনঃ
তখন ইষ্টের
মর্দখয়কে এই উত্তর দিতে আজ্ঞা করিলেন, তুমি যাও, শূশনে উপস্থিত সমস্ত যিহূদীকে একত্র কর, এবং সকলে আমার নিমিত্ত
উপবাস কর, তিন দিবস, দিনে কি রাত্রিতে কিছু আহার করিও না, কিছু পানও করিও না,
আর আমি ও আমার দাসীরাও তদ্রূপ উপবাস করিব; এইরূপে আমি রাজার নিকটে যাইব, তাহা ব্যবস্থাবিরুদ্ধ
হইলেও যাইব, আর যদি বিনষ্ট হইতে হয়, হইব।
আর তৃতীয় দিনে ইষ্টের রাজকীয় পরিচ্ছদ পরিধান করিয়া রাজার গৃহের ভিতরে প্রাঙ্গণে রাজার গৃহের সম্মুখে দাঁড়াইলেন; তৎকালে রাজা রাজবাটীতে গৃহদ্বারের সম্মুখে রাজ-সিংহাসনে উপবিষ্ট ছিলেন। আর রাজা যখন দেখিলেন যে ইষ্টের রাণী প্রাঙ্গণে দাঁড়াইয়া আছেন, তখন রাজার দৃষ্টিতে ইষ্টের অনুগ্রহ পাইলেন, রাজা ইষ্টেরের প্রতি আপন হস্তস্থিত স্বর্ণময় রাজদণ্ড বিস্তার করিলেন; তাহাতে ইষ্টের নিকটে আসিয়া রাজদণ্ডের অগ্রভাগ স্পর্শ করিলেন। পরে রাজা তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, ইষ্টের রাণী, তুমি কি চাও? তোমার অনুরোধ কি? রাজ্যের অর্ধেক পর্যন্ত হইলেও তাহা তোমাকে দেওয়া যাইবে। ইষ্টের উত্তর করিলেন, যদি মহারাজের ভাল বোধ হয়, তবে আমি আপনার জন্য যে ভোজ প্রস্তুত করিয়াছি, মহারাজ ও হামন সেই ভোজে অদ্য আগমন করুন।[7]
এখানে দেখা যাচ্ছে রানী ইষ্টের লোকেদের আদেশ দিয়েছিলেন যে তারা “তিন
দিবস[দিন]” উপবাস [রোজা] করবে কিন্তু তারপরের অধ্যায়ে সুস্পষ্টভাবে বোঝান হয়েছে যে ইহুদিরা
“তিন দিন” বলতে আসলে কি বুঝত! রাণী ৩য় দিনে উপবাস ভেঙ্গে রাজকিয় পোষাক পরিধান করেন এবং
সকলে ভোজের আয়োজন করেন।
পবিত্র শাস্ত্র হতে ২য় উদাহরনঃ
“আর তাহারা সাত দিন পর্যন্ত সম্মুখাসম্মুখি
হইয়া শিবিরে রহিল, পরে সপ্তম দিবসে যুদ্ধ বাধিয়া গেল; তাহাতে ইস্রায়েল-সন্তানগণ
এক দিনে অরামের এক লক্ষ পদাতিক সৈন্যকে সংহার করিল।”[8]
এখানে দেখা যাচ্ছে যে
সাত দিন শত্রুর সামনাসামনি শিবির স্থানপ করেছিলেন কিন্তু সাত দিনের দিনে তারা
যুদ্ধ করল।
পবিত্র শাস্ত্র হতে ৩য় উদাহরনঃ
আর তাহারা
ডুমুরচাকের এক খণ্ড ও দুই থলুয়া শুষ্ক দ্রাক্ষাফল তাহাকে দিল; তাহা খাইলে পর তাহার
প্রাণ সতেজ হইল, কেননা তিন দিবারাত্র সে রুটি ভোজন কি জল পান করে নাই। পরে দায়ূদ তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কাহার লোক? কোথা হইতে আসিলে?
সে কহিল, আমি একজন মিসরীয় যুবক, একজন অমালেকীয়ের দাস; অদ্য তিন দিন হইল, আমি
পীড়িত হইয়াছিলাম বলিয়া আমার কর্তা আমাকে ত্যাগ করিয়া গেলেন।[9]
এখানে দেখা যাচ্ছে একজন মিশরীয় যুবক তিনি ৩দিন এবং ৩রাত কিছু খাওয়া দাওয়া করেন নাই, কিন্তু তিনি তৃতীয় দিনে তিনি বলেছেন আজ ৩দিন হয়ে গেছে। পবিত্র শাস্ত্রের দ্বারা বিষয়টি পরিস্কার যে ইহুদিরা ৩দিন ৩রাত বলতে কি বুঝত।তাই আমারা যখন বাইবেল পড়ব এবং সেটা বোঝার চেষ্টা করব তখন সেটা বাইবেলের দৃষ্টিকোণ থেকে বুঝতে হবে।
0 coment rios: